চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

ইউক্রেইন হয়ে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি বন্ধ হল

অনলাইন ডেস্ক

১ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৫:৫২ অপরাহ্ণ

সোভিয়েত আমলের পাইপলাইনের মাধ্যমে ইউক্রেইনের ভেতর দিয়ে ইউরোপে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি নতুন বছরের প্রথমদিন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই বন্ধ হয়ে গেছে। ট্রানজিট চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া এবং যুদ্ধরত মস্কো ও কিয়েভ ওই পাইপলাইন দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ অব্যাহত রাখার বিষয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে না পারা এর কারণ।

 

২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ নিজেদের অংশীভূত করে নেওয়ার পরের বছর ইউক্রেইন দেশটি থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করে দেয়। এরপর মস্কো ও কিইভের বিপর্যস্ত সম্পর্ক ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানির সবচেয়ে পুরনো রুটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখল।

 

বুধবার এক বিবৃতিতে ইউক্রেইনের জ্বালানিমন্ত্রী জেওরমান হালুশচেঙ্কো বলেন, “রাশিয়ার গ্যাসের ট্রানজিট বন্ধ করে দিয়েছি আমরা। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। রাশিয়া তার বাজার হারাচ্ছে, তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। ইউরোপ ইতোমধ্যে রাশিয়ার গ্যাস বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।”

 

রয়টার্স বলছে, যুদ্ধের মধ্যে গ্যাসের এই প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রত্যাশিতই ছিল। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর দুই পক্ষের মধ্যে এ যুদ্ধ শুরু হয়। তারপর থেকেই ইউক্রেইন এই চুক্তি আর নবায়ন না করার বিষয়ে অবিচল ছিল। রাশিয়া ও ইউক্রেইনের মধ্যে হওয়া পাঁচ বছর মেয়াদি এ চুক্তি সময়সীমা ১ জানুয়ারি শুরু হওয়ার পরই শেষ হয়ে যায়।

রাশিয়া পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপে যত গ্যাস রপ্তানি করে তার প্রায় অর্ধেকই যেতো ইউক্রেইনের ওই ট্রানজিট লাইনের মাধ্যমে। তবে ট্রানজিট লাইনটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে তা রাশিয়ার বৃহৎ জ্বালানি কর্পোরেশন গ্যাজপ্রম গত বছরই অনুমান করেছিল বলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।

 

রাশিয়া এখনও কৃষ্ণ সাগরের তলদেশ দিয়ে যাওয়া তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস রপ্তানি করে চলছে। তুর্কস্ট্রিমের দু’টি লাইন আছে, একটি তুরস্কের অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য আর অন্যটি হাঙ্গেরি ও সার্বিয়াসহ মধ্য ইউরোপের ক্রেতাদের গ্যাস সরবরাহ করে। রাশিয়া ও ইউক্রেইনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস করার প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করে বিকল্প উৎসগুলো খোঁজা শুরু করে।

স্লোভাকিয়া ও অস্ট্রিয়ার মতো ইউক্রেইন হয়ে আসা রাশিয়ার গ্যাসের বাকি ক্রেতারাও বিকল্প সরবরাহের ব্যবস্থা করে নিয়েছে। তবে এই ট্রানজিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেসব দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের মধ্যে মলদোভাও আছে। দেশটি এক সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। দেশটি জানিয়েছে, এ পরিস্থিতিতে তাদের গ্যাসের ব্যবহার এক তৃতীয়াংশ কমানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।বুধবারের প্রথম কয়েক ঘণ্টায় এ বিষয়ে ইউরোপ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য আসেনি।

 

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন