ভারতে বসে শেখ হাসিনা নিজেকে অনেক কিছুই ভাবতে পারেন, তবে বাস্তবতা ভিন্ন; কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৯) চলাকালীন এই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়। আল-জাজিরা রবিবার (১৭ নভেম্বর) সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করেছে।
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সম্পর্কের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উঠে এসেছে ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। সেখান থেকে বক্তব্য দিচ্ছেন, বাংলাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য উপকারী নয়। তাই আমরা এসব বিষয়ে ভারতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। বলেছি, তাকে আশ্রয় দিচ্ছেন, ঠিক আছে। কিন্তু আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে, বিষয়টি যেন আমাদের জন্য কোন সমস্যা সৃষ্টি না করে।
শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. ইউনূস বলেন, তিনি নিজেকে অনেক কিছু বলতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এমনকি ভারতও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছে। সুতরাং আশ্রয়দাতাও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কিছু বলছে না।
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, এটা আরও কম হতে পারে। পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপর। যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় সংস্কার ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে সেটাই করা হবে।
তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি কি চার বছর থাকছেন? এমন প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, আমি বলেছি, সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে চার বছর। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।
পূর্বকোণ/মাহমুদ