ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্রমশ খর্ব হচ্ছে, নতুন এক প্রতিবেদনে এমন অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)। সংস্থাটি ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণ করে থাকে।-দ্য প্রিন্ট
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে, ছড়ানো হচ্ছে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য। আর অভিযোগ তোলা হয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত জুনের নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ রাজনৈতিক নেতাদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বক্তব্য বেড়ে যায়।
বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এতে আরও বলা হয়, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের দিকে মনোনিবেশ করে, যা অন্যায়ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রভাবিত করে এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস চর্চার ক্ষমতা সীমিত করে দেয়।
ইউএসসিআইআরএফ বলছে, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা ক্রমাগত অবনতিশীল এবং এক উদ্বেগজনক গতিপথ অনুসরণ করছে।
প্রতিবেদনে ভারত সরকারকে ধর্মান্তরবিরোধী, গোহত্যাবিরোধী ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মতো আইন ব্যবহারে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চালানোর জন্য দায়ী করা হয়েছে।
এতে ২০২৪ সালের ওয়াকফ সংশোধনী বিলেরও উল্লেখ করা হয়েছে, যার লক্ষ্য ওয়াকফ বোর্ডে (ইসলামিক ট্রাস্ট বোর্ড) অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রতিবেদনে ৭২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ও ১৯ বছর বয়সী একজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলাসহ গোরক্ষকদের অনেক হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ১৬১টি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির ৬০০ বছর পুরনো আখুন্দজি মসজিদ ভাঙার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। অভিযোগ করা হয়েছে, কোন সতর্কতা ছাড়াই এটি ভেঙে ফেলা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিনদিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরের কয়েকদিন পর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সফর চলাকালেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করল ইউএসসিআইআরএফ।
বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটি বলছে, ইউএসসিআইআরএফ যেন এজেন্ডা-চালিত প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার ইস্যুতে গুরুত্ব দেয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সংস্থাটি রাজনৈতিক এজেন্ডাসহ একটি পক্ষপাতদুষ্ট সংস্থা। ভারত এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ