চট্টগ্রাম সোমবার, ০৮ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইউরোপে জীবন কতটা বিষাক্ত-ভয়ানক!

মোহাম্মদ হাসান আলী শেখ

৫ জুলাই, ২০২৪ | ১:৪৭ অপরাহ্ণ

ইউরোপে জীবনটা কতটা বিষাক্ত-ভয়ানক না ফেস করলে কেউ বুঝবে না। আমাদের ফ্রান্সের একটি বাংলাদেশি কমিউনিটি গ্রুপে এক আপু পোস্ট করেছে দশ মাসের বাচ্চা দেখাশোনা করার জন্য সপ্তাহে ৫ দিন একজন আপু খুঁজছে। ঘণ্টায় পেমেন্ট ৫ ইউরো করে। মিনিমাম ১২ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবে (সকাল ৮ থেকে রাত ৮টা)। খাওয়া-দাওয়া ফ্রি। জাস্ট ইমাজিন চিন্তা করেন- কাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ এ দেশে।

 

স্বামী-স্ত্রী উভয় কাজ করে ক্লান্ত। দশ মাসের বাচ্চা সামলাবে কখন? পোস্টটা এমনি-এমনি দেননি, ঐ বাবা-মা কতটা অসহায় অনুভব করলে এমন পোস্ট করতে বাধ্য হয়েছেন সে ফিলিংস বোঝার ক্ষমতা আমাদের কারোই নেই।
এখানে কাজ সবার আগে, তারপর বাকি সব।
একটা রোবোটিকস লাইফ সার্কেলে আপনি পড়ে গেছেন। কাজ, ঘুম, মেট্রো, ট্রাম্ট ও বাসে আপনার জীবন বন্দি।
ইয়েস দিস ইজ ট্রু লাইফ এ্যাভরি পারসন।

 

টাকার নেশাতে বুদ হয়ে থাকার পর যখন দশ মাসের বাচ্চাটা (১১/১২ বছর) বড় হয়ে পড়ে সে তার স্বাধীনভাবে বাবা-মা ছেড়ে দূরে এঁকা নিজেকে লিড করা শুরু করে। তখন সেই বাবা-মাগুলো ভেতরে-ভেতরে কোনো আফসোস করে না। কারণ কি জানেন? তারা জানে তাদের হাতে আর করণীয় নেই কিছু। তারাও লোন করে বাড়ি কেনে সে টাকা দু’জনে মিলে পরিশোধ করার পর দেখে তাদের তো রিটায়ার্ড করার বয়স হয়ে গেছে।

 

তাদের দীর্ঘ ১৫-২০ বছর দু’জনের কাজ করার ফসল একটা বাড়ি, একটা গাড়ি, কিছু ব্যাংক ব্যালেন্স।
মোরাল অফ স্টোরি বিগ জিরো। কারণ সেগুলো এদেশেই। মারা যাবার পর তার লাশ আনা হয় দেশে।
জীবনে একবারও সে সন্তান তার বাবা-মা কবর জেয়ারতের জন্য যাবে কিনা সন্দেহ। এমনকি বাংলাদেশ যে তার নিজের দেশ সেটিই সে মানতে চাইবে না।

 

তাহলে কি দাঁড়ালো, আপনি আপনার পরবর্তী কোনো জেনারেশন যে পৃথিবীতে আছে তার আর অস্তিত্ব খুঁজেই পাবে না কেউ।
এমন বন্দি জীবন চাই না, সত্যি চাই না।

 

লেখক : ফ্রান্স থেকে

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন