ভারতজুড়ে কার্যকর হলো নতুন তিন ফৌজদারি আইন। বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও সোমবার (১ জুলাই) থেকেই কার্যকর হলো এই আইন। এর ফলে ভারতীয় আইন ব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া নিয়মগুলি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সবার জন্য দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্যই এই পরিবর্তন করা হয়েছে।ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ভারতে নতুন আইন কার্যকর হচ্ছে। মোদি সরকারের দাবি, ব্রিটিশ আইনে এতো দিন সাজার কথা বলা ছিল। এবার নতুন আইনে সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায় পান সেই ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে।
১৮৬০ সালে তৈরি ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তে হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। ১৮৯৮ সালের ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট বা ফৌজদারি দণ্ডবিধির নতুন রূপ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট বা ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের বদলে কার্যকর হচ্ছে ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম।
জানা গেছে, ন্যায় সংহিতায় নতুন ২০টি অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে। বাদ পড়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে থাকা ১৯টি বিধান। ৩৩টি অপরাধের জন্য কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।৮৩টি অপরাধের জন্য জরিমানার পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে। পরিবেশ দূষণ ও মানব পাচারের মতো অপরাধকে ন্যায় সংহিতায় সাজার আওতায় আনা হয়েছে। যুক্ত করা হয়েছে সাইবার অপরাধ এবং আর্থিক প্রতারণার মতো নতুন অপরাধ।
নতুন আইনে নারী সুরক্ষা এবং নারীদের সঙ্গে ঘটা বিভিন্ন অপরাধের ক্ষেত্রে বিধি আরও কঠোর করা হয়েছে। ১৮ বছরের কমবয়সি বা নাবালিকা ধর্ষণে সাজা মৃত্যুদণ্ড বা আজীবন কারাদণ্ড এবং গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০ বছর থেকে আজীবন কারাদণ্ডের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
নতুন আইন যে কোনও ব্যক্তিকে যে কোনও থানায় জিরো এফআইআর দায়ের করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধী দলগুলিও তাড়াহুড়ো করে বিল পাশের বিরোধিতা করেছিল। এখনই আইন বলবৎ না করে পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন তিনি। এসব বিতর্কের মধ্যেই সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হয়ে যায় তিন অপরাধমূলক আইনের বিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সেই বিলে সই করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
পূর্বকোণ/পিআর