পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন শেহবাজ শরিফ। রবিবার (৩ মার্চ) দেশটির জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে এই পদে নির্বাচিত হন তিনি।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন প্রভাবশালী শরিফ পরিবারের এই সদস্য। রবিবার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
ডন বলছে, পিএমএল-এন সভাপতি শেহবাজ শরিফ ২০১ ভোট পেয়ে পাকিস্তানের ২৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন বলে জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে পিটিআইয়ের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান পেয়েছেন ৯২ ভোট।
এরপর আয়াজ সাদিক শেহবাজকে সংসদ নেতার আসনে ডেকে নেন। নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই সংসদে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ঘোষণার পর বড় ভাই নওয়াজকে জড়িয়ে ধরেন শেহবাজ।
বৃহস্পতিবার অনেক জল্পনা কল্পনা ও শেষ মুহুর্তের জটিলতার পর নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর পাকিস্তানের ৬তম জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। সেদিনই নির্ধারণ হয়, রোববারের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোটের আয়োজন করা হবে।
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের ২১ দিনের মধ্যে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলকে (এসআইসি) সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় অধিবেশন ডাকতে অস্বীকৃতি জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতারা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করে। তারা পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সংরক্ষিত আসন পেতে সুন্নি ইত্তেহাদ দলে যোগ দেন। বুধবার রাতে একেবারে শেষ মুহূর্তে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হিসেবে বিবেচিত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এর আগে প্রেসিডেন্টকে পাশ কাটিয়ে ২৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকার বিষয়ে জাতীয় পরিষদ সচিবালয় থেকে বুধবার একটি নোটিশ দেওয়া হয়।
সেদিন রাতে প্রেসিডেন্ট আলভিও একই সময়ে অধিবেশন আহ্বান করেন। অধিবেশন ডাকতে অস্বীকার করায় প্রেসিডেন্ট আলভির সমালোচনা করেন জোট সরকারের দুই দল পিপিপি ও পিএমএল-এনের নেতারা। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনেরও অভিযোগ আনেন তাঁরা।
প্রেসিডেন্ট আলভি অধিবেশন না ডাকার বিষয়ে অনড় থাকলে জাতীয় পরিষদের স্পিকার অধিবেশন আহ্বান করেন। তবে প্রেসিডেন্টকে পাশ কাটিয়ে স্পিকার অধিবেশন ডাকতে পারেন কি না, তা নিয়ে আইনি বিতর্ক শুরু হয়। তবে পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট অধিবেশন আহ্বান করায় এই বিষয়টির সুরাহা হয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর