উন্নত জীবনের আশায় জরাজীর্ণ নৌকায় চড়ে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ৫৬৯ জনের মতো রোহিঙ্গা নিহত কিংবা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৯ সালের পর এবারই এতো রোহিঙ্গা নাগরিক সাগরে প্রাণ হারালেন।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
ইউএনএইচসিআর বলছে, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির বা মিয়ানমারের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ২০২৩ সালে প্রায় সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এক বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র ম্যাথিউ সল্টমার্শ বলেছেন, নৌকায় চড়ে সাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টাকারী প্রতি আটজন রোহিঙ্গার মধ্যে একজন মারা বা নিখোঁজ হয়েছেন। রোহিঙ্গাদের এত প্রাণহানি আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগরকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী নৌপথে পরিণত করেছে।
বছরের পর বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছেন রোহিঙ্গারা। কিন্তু বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে তাদের বিদেশি হিসেবে দেখা হয় এবং বর্তমানে তাদের কোনো নাগরিক অধিকার নেই। ফলে মিয়ানমার ছেড়ে অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় মিয়ানমারের নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের আগমন বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দেড় হাজারের বেভি রোহিঙ্গা নাগরিক ইন্দোনেশিয়া উপকূলে অবতরণ করেছেন। এক সময় ইন্দোনেশিয়া তাদের আশ্রয় দিলেও এখন ভালো চোখে না। এমনকি নৌকা নিয়ে তীরে ভেড়ার পরও তাদের সাগরের ফিরিয়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার গ্রামবাসী ও সামরিক বাহিনী।
এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের অনেকেই মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশটিতে বর্তমানে প্রায় এক লাখ ৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন।
পূর্বকোণ/এসি