চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

২ হাজার মানুষ লাফিয়ে পড়ার পর ব্রিজে লাগানো হলো স্টিলের নেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৫ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যা রুখতে একটি ব্রিজে লাগানো হয়েছে স্টিলের নেট। ১৯৩৭ সালে খুলে দেওয়ার পর থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষ সেখান থেকে নদীতে লাফ দিয়েছে। অর্থাৎ নির্মাণের ৮৭ বছর পর আত্মহত্যা রুখতে সেতুটিতে নেট লাগানোর কাজ সম্পন্ন হলো।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট ব্রিজে আত্মহত্যা প্রতিরোধ জাল লাগানোর কাজ অবশেষে সম্পন্ন হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মার্কিন এই শহরে ১৯৩৭ সালে সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর থেকে প্রায় ২ হাজার লোক তাদের মৃত্যুর জন্য ব্রিজ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বলে জানা যায়।

বিবিসি বলছে, যে পরিবারগুলো ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার কারণে প্রিয়জনকে হারিয়েছে তারা কয়েক দশক ধরে এই সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়ে এসেছে। আর এরপরই আত্মহত্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা- যা নেট নামেও পরিচিত- ১.৭ মাইল (২.৭ কিলোমিটার) দীর্ঘ সেতুটির প্রায় ৯৫ শতাংশজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে।

গোল্ডেন গেট ব্রিজ হাইওয়ে অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ডিস্ট্রিক্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নেট লাগানোর উদ্দেশ্য হলো ব্রিজ থেকে লাফ দেওয়া ব্যক্তিদের মৃত্যুর সংখ্যা কমানো। নেট একটি প্রমাণিত ব্যবস্থা যা লোকেদের লাফ দেওয়া থেকে বিরত রাখে। এটি হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের যত্ন ও আশার প্রতীক হিসাবে কাজ করে এবং প্রয়োজনে লোকেদের (বেঁচে থাকার) দ্বিতীয় সুযোগ দেয়।’

ব্রিজটিতে স্টেইনলেস স্টিলের নেট লাগানোর সিদ্ধান্তটি ২০১৪ সালে অনুমোদিত হয়েছিল। কিন্তু তার চার বছর পরেও সেই কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। অনেকে এটির বিরোধিতা করেছিলেন। তাদের দাবি ছিল, এই পদক্ষেপ সেতু থেকে নদীর দৃশ্য দেখাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং একইসঙ্গে এটি খুব ব্যয়বহুল পদক্ষেপ।

বিবিসি বলছে, ব্রিজ থেকে লাফ দেওয়ার পরে বেঁচে থাকা প্রায় ৪০ জনের মধ্যে একজন হচ্ছেন কেভিন হাইন্স। তবে নিজের সেই ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মহত্যা প্রতিরোধে একজন কর্মী হয়ে উঠেছেন। হাইন্স নিজেও সেতুতে নেট লাগানোর পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন।

হাইন্স অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ‘যদি সেখানে নেট থাকত, তাহলে আমাকে পুলিশ থামিয়ে নিয়ে যেত এবং অবিলম্বে আমি আমার প্রয়োজনীয় সাহায্য পেতাম এবং কখনোই আমার পিঠ ভাঙত না, কখনোই আমার তিনটি কশেরুকা ভেঙে ফেলতাম না।’

গোল্ডেন গেট ব্রিজ হাইওয়ে এবং ট্রান্সপোর্টেশন ডিস্ট্রিক্ট বলেছে, এই নেট ইতোমধ্যেই বেশ ভালো প্রভাব ফেলেছে। প্রতি বছর গড়ে গোল্ডেন গেট ব্রিজে প্রায় ৩০টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। কিন্তু ২০২৩ সালে নেট লাগানোর কাজ চলার সময়ই সেখানে ১৪টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। যা আত্মহত্যার গড় সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কম।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন