ভারতের সরকারি এক হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। এর মধ্যে ১২ জনই নবজাতক। অন্যদিকে মারা যাওয়া প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে বেশিরভাগই মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে।
দেশটির মহারাষ্ট্রের নান্দেদ জেলার সরকারি শঙ্কররাও চভন হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রের নান্দেদের ওই সরকারি হাসপাতালে ১২ নবজাতক এবং একই সংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ক মারা গেছেন। সরকারি শঙ্কররাও চভন হাসপাতালের ডিন একদিনে এতো সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর জন্য ওষুধ এবং হাসপাতালের কর্মী সংকটকে দায়ী করেছেন।
হাসপাতালের ডিন বলেছেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ছয় ছেলে শিশু ও ছয় মেয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিও বিভিন্ন রোগের কারণে মারা গেছেন। তবে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে। হাসপাতাল কর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হয়েছে। তাই আমরা অসুবিধায় পড়ে গেছি।’
তিনি আরও বলেন, আমদের হাসপাতালটি ছোট, কিন্তু ৭০-৮০ কিলোমিটারের মধ্যে এটিই একমাত্র চিকিৎসার জায়গা। তাই দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা আমাদের কাছে আসেন। কোনও কোনও দিন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায় এবং আমাদের বাজেটের সমস্যায় পড়তে হয়। এটি হাফকাইন ইনস্টিটিউট। আমাদের তাদের কাছ থেকে ওষুধ কেনার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। আমরা স্থানীয়ভাবে ওষুধ কিনে রোগীদের দিয়েছি।’
এদিকে সরকারি হাসপাতালে একদিনে এতো মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্ডে সরকারকে আক্রমণ করেছে রাজ্যের বিরোধীরা। এই ঘটনায় ‘ট্রিপল-ইঞ্জিন সরকার’ অর্থাৎ বিজেপি, একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং অজিত পওয়ারের এনসিপি-কে এর দায় নিতে হবে বলেও দাবি করেছে তারা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় করা এক পোস্টে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির মুখপাত্র বিকাশ লাওয়ান্ডে বলেছেন, ‘শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের ওষুধ সরবরাহের অভাবের কারণে নান্দেদের সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন সদ্যোজাত শিশুসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়নি। উৎসব ও অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেওয়া সরকারের জন্য এটা লজ্জার।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সোমবার রাতে ওই হাসপাতালে যান কংগ্রেস নেতা অশোক চভন। তিনি বলেন, ‘ড. শঙ্কররাও চভন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং গুরুতর। এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি অবিলম্বে সাহায্য পাঠানো উচিত সরকারের।’
তিনি আরও বলেন, আরও ৭০ জনেরও অবস্থা সংকটাপন্ন। অনেক নার্সকে বদলি করা হয়েছে, কিন্তু তাদের পরিবর্তে আর কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, তাই প্রয়োজনীয় সকল সাহায্য ও সংস্থান দেওয়া উচিত সরকারের।
অবশ্য মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
পূর্বকোণ/এসি