পাকিস্তানে খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় একখণ্ড জমি নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ সংঘর্ষ থামাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আরও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের অনুরোধ করেছে প্রাদেশিক সরকার।
গত ৭ জুলাই কুররাম জেলার ডানডার সেহরা ও বশেহরা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে জমি নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা স্থানীয় আটটি এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। উভয়পক্ষ ভারী ও স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করায় পরিস্থিতি ব্যাপক লড়াইয়ের রূপ নেয়। এতে গত কয়েকদিনে ১১ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও ৭০ জনেরও বেশি আহত হন। এ লড়াইয়ের কারণে ওই এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাস্তা বন্ধ করে রাখায় খাবার, ওষুধ ও জ্বালানীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।
পাকিস্তানের ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র ডন জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবারও পেওয়ার, গিদো, বালি-শখেল, খার কিল্লাই, সাদ্দা, পারা চামকানি, মুকবাল ও কুঞ্জ আলিজাই এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছিল।
পারাচিনার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক কায়সার আব্বাস ডনকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। অধিকাংশ আহতকে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করা হলেও গুরুতর আহত তিনজনকে পেশোয়ারের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পরিস্থিতি আরও গুরুতর আকার ধারণ করার আগেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করতে ও সংঘর্ষ থামাতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় পরিষদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার স্থানীয় পিপিপি নেতা ফয়সাল কুন্ডি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘দুই উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে, যা সঠিক নয়।’
খাইবার পাখতুনখওয়ার স্বরাষ্ট্র ও স্থানীয় নৃগোষ্ঠী বিষয়ক মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘জমি নিয়ে ওই বিরোধ’ মেটাতে ৩০ সদস্যের একটি কমিটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুররামে গিয়েছেন। তারা স্থানীয় ডেপুটি কমিশনারের তত্ত্বাবধানে সাদ্দা ও পারা-চিনারের মুরুব্বিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
কুররামের ডিসি সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সহিংসতা থামাতে তারা স্থানীয় মুরুব্বিদের সঙ্গে মিলে কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর হুসেইন তাদের অসহায়ত্ব বর্ণনা করে বলেছেন, ‘একদিকে আমরা রকেট বিস্ফোরণের মুখোমুখি হচ্ছি আর অপরদিকে রাস্তা বন্ধ থাকায় আমরা ওষুধ ও খাবারের সংকটে ভুগছি। এই সহিংসতা বন্ধে আশু পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পূর্বকোণ/পিআর