চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

অপারেশনের পর সংক্রমণ প্রতিরোধ জরুরি

অনলাইন ডেস্ক

২৭ মে, ২০২৪ | ১১:৫৩ অপরাহ্ণ

রোগীদের নানাবিধ সমস্যার কারণে অপারেশন বা সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে অপারেশন-পরবর্তী সময়ের মাঝে পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে রোগীর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। অপারেশন-পরবর্তী ইনফেকশন একটি মারাত্মক সমস্যা। এ কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

সংক্রমণ এড়াতে করণীয়:

১) অপারেশনের আগে: প্রথমেই সংক্রমণের ঝুঁকি আছে এমন রোগী বাছাই করতে হবে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অপারেশনের পর ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের ঝুঁকি বেশি থাকে।

এ ছাড়া এ ধরনের রোগীদের মধ্যে আছেন—ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি, শরীরে যাদের অতিরিক্ত মেদ আছে, ধূমপানের অভ্যাস যাদের আছে, যারা অপুষ্টিতে ভুগছে, যাদের রক্তশূন্যতা রয়েছে এবং দীর্ঘদিন ধরে যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করছে। অপারেশনের আগে এ ধরনের রোগীকে সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিতে হবে। অপারেশনের কমপক্ষে চার সপ্তাহ আগে ধূমপান বন্ধ করতে এবং ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলতে হবে। রক্তশূন্যতা ও অপুষ্টি থাকলে সেগুলোর চিকিৎসা করতে হবে। স্টেরয়েড যারা সেবন করে তাদের ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শে বন্ধ করা যেতে পারে। অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশের আগে ভালোভাবে সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে রোগীকে। অপারেশনের স্থানে চুল থাকলে সেই স্থান শেভ না করাই শ্রেয়।

২) অপারেশনের সময়: অপারেশনজনিত ইনফেকশন প্রতিরোধের অন্যতম শর্ত হলো অপারেশন থিয়েটার এটিকেট মেনে চলা। অপারেশন থিয়েটার, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি পর্যাপ্তভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাইরের জামা-কাপড়, স্যান্ডেল নিয়ে কোনোভাবেই থিয়েটারে প্রবেশ করা যাবে না। সম্ভব হলে ডিস্পোজেবল গাউন ব্যবহার করতে হবে। শুধু নির্ধারিত ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয় নিয়ম মেনে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করবেন, অন্য কেউ নয়। এ ছাড়া অপারেশন চলাকালে রোগীকে ভালোভাবে অ্যান্টিসেপটিক ওয়াশ দিতে হবে। অপারেশনের ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা আগে প্রফাইলেক্টিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা অপারেশনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত এক ডোজ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার দরকার হতে পারে। ইনফেকশন প্রতিরোধে রোগীর ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর পাশাপাশি অক্সিজেন স্যাচুরেশনও ঠিক রাখা জরুরি।

৩) অপারেশনের পর: রোগীর ড্রেসিং ভিজে গেলে দ্রুততম সময়ে পরিবর্তন করে দিতে হবে। প্রস্রাবের রাস্তায় কোনো নল দেওয়া থাকলে সেটির এবং ইনজেকশন দেওয়ার ক্যানুলা সাইটের যত্ন নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করাতে হবে এবং ড্রেসিং পরিবর্তন করতে হবে। মনে রাখবেন, দর্শনার্থীর সংখ্যা যত কম হবে ইনফেকশনের আশঙ্কাও তত কম থাকবে।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মোসাব্বির আহমাদ খান, বিশেষজ্ঞ বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুর।

 

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট