রমযানে আমরা খাবারের অভাবে যতটা না দুর্বল হই তারচে বেশি দুর্বল হই মিনারেলের অভাবে। মানুষ জন্মগতভাবে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা নিয়ে দুনিয়াতে আসে। কিন্তু ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স হলে তার সাথে লড়াই করার মত কোন ব্যবস্থা আমাদের শরীরে নেই।
ইলেক্ট্রোলাইট কি কি??
১) সোডিয়াম
২) পটাসিয়াম
৩) কার্বনেট
৪) ক্লোরাইড
৫) ফসফেট (ব্লাড ইলেক্ট্রোলাইট হিসেবে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ)
৬) ম্যাগনেসিয়াম
৭) ক্যালসিয়াম
আমি বিশেষভাবে বলবো সোডিয়াম-পটাসিয়াম এই দুটো জিনিসের কথা। ম্যাগনেসিয়াম মোটামুটি সবারই কমের দিকে থাকে, তবে তা ব্লাড লেভেলে না, সেলুলার লেভেলে। ক্যালসিয়ামের জন্য আসলে কাটাসহ মাছ-শাক আর যথেষ্ট ভিটামিন ডি+কে-২ হলেই হয়ে যায়।
রমযানে চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে, সারাদিন আমরা পানি না খাওয়ার কারণে ইফতারে প্রচুর পানি খাই। এরপর দেখা যায় মাথাটা খালি খালি লাগে, হাত পা যেন ছেড়ে দেয়।
এর একটা কারণ রিএক্টিভ হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা খাবার পরবর্তী রক্তে সুগার লেভেল কমে যাওয়া হলেও এর চেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সোডিয়াম-পটাসিয়ামের অভাব।
পটাসিয়ামের অভাবে পিপাসা আরও বেশি লাগে। আপনি যদি তীব্র পটাসিয়ামের ঘাটতিতে থাকেন, এক ড্রাম পানি খেলেও আপনার পিপাসা না যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
ওদিকে একসাথে অতিরিক্ত পানি খেলে আরেক বিপদ, সোডিয়াম লেভেল নেমে যেতে পারে।
এই সমস্ত সমস্যা থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে- রুহ আফজা-ট্যাং এবং এ জাতীয় আরো অনেক ব্যয়বহুল শরবত পান না করে, অতিরিক্ত ফলের রস না খেয়ে পাঁচ টাকার একটা ওরস্যালাইন খেয়ে ফেলা।
যাদের উচ্চরক্তচাপ ও কিডনির অসুখ আছে, তারা এই কাজটা ডাক্তার/ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ ছাড়া করতে যাবেন না।
আর হ্যা, যদি হাতে যথেষ্ট টাকা পয়সা থাকে, ডাবের পানি খেলে কিন্তু সবচেয়ে ভালো হবে।
লেখক: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ