বিচিত্র অ্যাজমা রোগের ৪০ হাজারের বেশি কারণ রয়েছে—এর মধ্যে একটি হলো ফিজিক্যাল ফ্যাক্টর। অর্থাৎ ঠাণ্ডা বা গরমে অ্যাজমার উৎপাত। শীতের কারণে একদিকে ফুসফুসের নালিগুলো সংকুচিত হয়। অন্যদিকে শীতের আঘাতে মাস্ট কোষ থেকে হিসটামিন ও অন্যান্য কেমিক্যাল মেডিয়েটরগুলো অধিকতর নিঃসরণ হয়। এগুলো ফুসফুসের নালির সংকোচন ঘটায়।
ভাইরাস ঠেকাতে মাস্ক: এ ছাড়া শীতকালে কিছু কিছু ভাইরাসের উৎপাত বাড়ে। এর মধ্যে ফ্লু ভাইরাস, রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস, কোল্ড ভাইরাস, রাইনো ভাইরাস উল্লেখযোগ্য। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। এসব ভাইরাস ফুসফুসে জটিল প্রদাহ সৃষ্টি করে শ্বাসকষ্ট ঘটায়। করোনার শরীরের কাটাগুলো গ্লাইকোপ্রোটিনে ঠাসা। এটা শ্বাসকষ্টের অন্যতম কারণ। এর প্রতিরোধ হলো ভ্যাকসিন ও মাস্ক।
অবশ্য সবগুলোর ভ্যাকসিন নেই। এসবের ওপরে রয়েছে ক্রনিক ব্রংকাইটিস, এমফাইসেমা, ব্রংকিয়েকটেসিস ও সিওপিডি এবং ক্রনিক নিউমোনিয়ার সবটিতেই শ্বাসকষ্ট হয় এবং তা শীতে বাড়ে। যথাযথ চিকিৎসা ছাড়া সমস্যা কমবে না, বরং বাড়বে।
গর্ভাবস্থায় অ্যাজমা: গর্ভাবস্থায় অ্যাজমার প্রকোপ কমে যায়। তবে কোনো কোনো সময় গর্ভ ধারণের কারণেই অ্যাজমা হয়ে থাকে। শীতকালে এটি একটু বেশি হয়। তবে এ নিয়ে অনেক পর্যালোচনা বা গবেষণার প্রয়োজন। এ ধরনের অ্যাজমা গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে হলেও পরের দিকে কমে যায়। যেভাবেই অ্যাজমা হোক না কেন, গর্ভাবস্থায় ফুসফুসে অক্সিজেন সর্বোচ্চ মাত্রায় রাখা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সালবিউটামল ইনহেলার, নেবুলাইজার ও অক্সিজেন নিরাপদ ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে।
হার্ট ফেইলিওরেও শ্বাসকষ্ট: শ্বাসকষ্ট মানেই ফুসফুসের রোগ নয়। হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ট বড় হয়ে গেলে ফুসফুসে পানি জমে। হৃৎপিণ্ডের বাঁ প্রকোষ্ট বড় হলে যেমন শ্বাসকষ্ট হয়, তেমনি ডান প্রকোষ্ট বড় হলে পালমোনারি হাইপারটেনশন হয়ে শ্বাসকষ্ট হয়। হৃৎপিণ্ডের মধ্যবর্তী দেয়ালে জন্মগত ছিদ্র থাকলে কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট হয়। রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলেও শ্বাসকষ্ট হয়। মোট কথা কী কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তার কারণ বুঝে চিকিৎসা করতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. এম এ হাসান, প্রেসিডেন্ট ও প্রধান গবেষক, অ্যালার্জি অ্যাজমা ও এনভারনমেন্টাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ।শীতে বাড়ে অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট।
পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ