খাবার হজমে সাহায্য করে পিত্তথলি থেকে নিঃসৃত পিত্তরস। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে, বিলিরুবিনের আধিক্য দেখা দিলে বা পিত্তরস জমে গিয়ে পিত্তথলিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে। পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই গলব্লাডারের সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হয়।
স্ট্রবেরি গলব্লাডার: অতিরিক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল রক্তনালি, হার্ট বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মতো পিত্তথলির অভ্যন্তরের মিউকোসা নামক লেয়ারেও জমতে পারে। ছোট ছোট ক্রিস্টাল আকারে জমতে জমতে ভেতরের ওয়ালটাকে দেখতে ছবির মতো স্ট্রবেরি ফলের মতো দেখায়। ফলে এর নাম দেওয়া হয়েছে স্ট্রবেরি গলব্লাডার। এটি কোলেস্টেরোসিস নামেও পরিচিত। সাধারণত মাঝ বয়সী নারীরা এতে বেশি ভুগে থাকেন। তরুণদের মধ্যে এই সমস্যা সচরাচর দেখা যায় না।
লক্ষণ:
১) বদহজম
২) গ্যাস
৩) খাবারের পরে অস্বস্তি
৪) পেটের ডান দিকে ব্যথা
ঝুঁকি:
১) এ ধরনের রোগীরা পাথরবিহীন পিত্তথলির ইনফেকশনে ভুগতে পারেন।
২) পলিপ হতে পারে।
৩) হজমের সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসা: গলব্লাডার না থাকলেও লিভার থেকে ক্রমাগত পিত্তরস তৈরি হয় এবং তা ক্রমাগত ক্ষুদ্রান্ত্রে চলে যায়। পিত্তরস জমা রাখে পিত্তথলি। খাবার গ্রহণের পর সিগনাল পেলে সেখান থেকে পিত্তনালির মাধ্যমে অন্ত্রে গিয়ে খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। পিত্তথলিতে অসুখ হলে তার স্বাভাবিক কাজ সে করে না। পিত্তরস তখন সরাসরি লিভার হতে অন্ত্রে চলে যায়।
এটিতে শরীর অভ্যস্ত হয়ে যায়। তাই অসুস্থতার জন্য পিত্তথলি ফেলে দিলেও তেমন কোনো সমস্যা হয় না এবং এটাই একমাত্র চিকিৎসা। রোগের উপসর্গ দেখা দিলে ল্যাপারোস্কপিক পদ্ধতিতে অপারেশন করা যায়। অপারেশনের পর বেশির ভাগ মানুষই হালকা থেকে মাঝারি ব্যথা অনুভব করে। সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন পর বেশির ভাগ অস্বস্তি কেটে যায়। সার্জারির পর ক্লান্ত অনুভব করাটা স্বাভাবিক। তাই বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এক সপ্তাহ পর থেকে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজকর্ম করা যেতে পারে। তবে অন্তত দুই সপ্তাহ ভারি কোনো জিনিস তোলা যাবে না। কঠিন কোনো ব্যায়াম করা যাবে না। অপারেশনের প্রয়োজন না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে এবং মেদ কমাতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মোরশেদ আলী, জেনারেল ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জন, পার্কভিউ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম।
পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ