বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস-২০২৩ উপলক্ষে লিভার কেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে এবং দৈনিক পূর্বকোণের সহযোগিতায় গত ২৫ জুলাই মঙ্গলবার পূর্বকোণ সেন্টারের মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী কনফারেন্স হলে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে ক্রোড়পত্রটি ছাপা হলো।
ডা. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ
সহকারী অধ্যাপক (লিভার বিভাগ)
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
দেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত। এটির চিকিৎসা আগে ব্যয়বহুল ছিল। সেটা এখন অনেক কমে গেছে। দেশে এখন মাত্র এক লাখ টাকায় হেপাটাইটিস সি রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব। এক যুগ আগে এ ধরনের রোগীর চিকিৎসায় ব্যয় হতো ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা। আমি সরকার এবং ওষুধ কোম্পানিগুলোকে ধন্যবাদ দিতে চাই- তারা ওষুধের ব্যয়ভার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। সরকার এবং ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রতি আমার অনুরোধ ভর্তুকি দিয়ে হলেও যাতে এসব ওষুধের দাম আরও কমানো হয়। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও আরও ছাড় দেওয়া দরকার। কারণ হেপাটাইটিস রোগীদের ৬ মাস, ১ বছর পরপর পরীক্ষা করাতে হয়। ২০০৫ সাল থেকে দেশে ঠিকাদান কর্মসূচি বা ইপিআই কার্যক্রমে হেপাটাইটিসের ভ্যাকসিন ঢুকানো হয়েছে। এটি ইতিবাচক ফল দিচ্ছে।
অধ্যাপক ডা. আলোক কুমার রাহা
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, লিভার বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
সাধারণত দেখা যাচ্ছে- হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাস পানিবাহিত রোগের মাধ্যমে ছড়ায়। এগুলোকে আমরা একুইট ফর্মের হেপাটাইটিস বলি। একুইট ফর্ম মূলত বসন্তকাল এবং বর্ষাকালে ছড়ায়। হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাসের লক্ষণ মূলত- ক্ষুধামন্দা, খাদ্যে অরুচি, শরীরের গিরায় গিরায় ব্যথা ইত্যাদি। হেপাটাইটিস বি ও সি ক্রনিক ফর্মে ছড়ায়। এগুলো মারাত্মক ভাইরাস। কোনো উপসর্গ ছাড়াই আমাদের শরীরে থাকতে পারে। পরীক্ষা না করালে এ ভাইরাসে আক্রান্ত কি না- নিশ্চিত হওয়া যায় না। তবে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস অনেক সময় একুইট ফর্মেও চলে আসে। ক্ষুধামন্দা, অরুচি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিলে বি ভাইরাস শনাক্ত করা যায়। কিন্তু সি ভাইরাসের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের উপসর্গ থাকে না। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সাধারণত এটি আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তবে অনেক সময় ৫-৭ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে মারাত্মক লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সার হয়ে থাকে। এটি আতঙ্কিত হওয়ার একটি কারণ। হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাসের ক্ষেত্রে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে- ডায়াগনোসিসটা ভালোভাবে নিশ্চিত করা। ল্যাব টেস্টে পজিটিভ এলেই মেডিসিন নিতে হবে। প্রায় ৯০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে এ ভাইরাস অকার্যকর। হেপাটাইটিস বি এর ক্ষেত্রে কয়েকটি মেডিসিন দিয়ে পুরোপুরি নির্মূল করা না গেলেও রোগীকে সারাজীবন চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হয় না। খুব অল্প খরচে এই ভাইরাসের চিকিৎসা সম্ভব। হেপাটাইটিস সি এর ক্ষেত্রে আগে যে ‘ইন্টারপ্রিট বি’ নামে একটি চিকিৎসা ছিল তা এখন লাগে না। এখন মুখের ওষুধের মাধ্যমে ১২ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে এ রোগের চিকিৎসা করা যায়। তবে এ চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল।
প্রফেসর ড. মো. ফসিউল আলম
সাবেক উপাচার্য, ফেনী ইউনিভার্সিটি
হেপাটাইটিস জীবনঘাতী একটি রোগ। এটি প্রতিরোধে সচেতন নাগরিক হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অনেক বেশি। ২০২১ সালে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে শিক্ষার্থী (প্রাথমিক-বিশ্ববিদ্যালয়) রয়েছে দুই কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার, শিক্ষক রয়েছে ৬ লাখ ২৭ হাজার। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে পারিবারিক পর্যায়ে বা নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করতে পারে। এছাড়া সরকার, বিভিন্ন সোশ্যাল অর্গানাইজেশন, লিভার কেয়ার সোসাইটি সমন্বিতভাবে যদি এগিয়ে আসে তাহলে এর চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ সম্ভব।
ডা. মো. নওশাদ খান
এম ও সি এস
সিভিল সার্জন কার্যালয়, চট্টগ্রাম
হেপাটাইটিস বি ও সি থেকে লিভার সিরোসিস হতে পারে। সিরোসিস থেকে মৃত্যু বা ক্যান্সার হতে পারে। এটির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল। সুতরাং এটি প্রতিরোধই উত্তম। একটু সচেতন হলেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ জন্য আমাদের নিরাপদ পানি পান করতে হবে। বিয়েতে বা কোনো রেস্টুরেন্টে অনেক সময় দূষিত পানি দেওয়া হয়। এসব পানি পান করলে হেপাটাইটিস হতে পারে। হালিশহরে হেপাটাইটিসের সংক্রমণ হলো। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের সময় উপযোগী পদক্ষেপের কারণে কোনো মৃত্যু ঘটেনি। এ জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। নিয়মিত হাত পরিষ্কার করতে হবে। রাস্তার পাশে বিক্রি করা দূষিত খাবার খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা যাবে না। এসব খাবারের কারণে লিভারে চর্বি জমে। চর্বির কারণে আমাদের হেপাটাইটিস হচ্ছে।
ডা. সোয়েলা শাহনাজ
সহকারী অধ্যাপক, গাইনী ও অবস বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
গর্ভাবস্থায় যদি কেউ হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ডেলিভারি হাসপাতালে করাতে হবে। ডেলিভারি সিজার বা নরমাল যেভাবেই হোক বাচ্চা জন্ম নেয়ার সাথে সাথে হেপাটাইটিস ভাইরাসের ভ্যাক্সিন দিয়ে দিতে হবে। এতে বাচ্চা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৯৫ শতাংশ কমে যায়। হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত হলে গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের জন্য নিরাপদ ওধুধ এখন পাওয়া যায়। হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের ক্ষেত্রে মাকে আশ্বস্ত করতে হবে। যেহেতু সাথে সাথে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। ৬ মাস পর থেকে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। ডেলিভারির পরপরই মা স্বাভাবিকভাবে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে পারবেন।
ডা. মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন সাহেদ চৌধুরী
সহকারী অধ্যাপক, হেপাটোলজি বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
হেপাটাইটিস রোগ হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি ও ই ভাইরাসের কারণে হয়। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ভারী অ্যালকোহল ব্যবহার, নির্দিষ্ট ওষুধ, বিষ, অন্যান্য সংক্রমণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হেপাটাইটিস এ ও ই মূলত দূষিত খাবার এবং পানির মাধ্যমে ছড়ায়। বিশেষ করে ফাস্ট ফুড, রাস্তার শরবত, চটপটি ইত্যাদি এর জন্য বেশি দায়ী। হেপাটাইটিস বি মূলত যৌনবাহিত রোগ। তবে গর্ভাবস্থা বা প্রসবের সময় মা থেকে শিশুর কাছেও যেতে পারে এবং রক্তের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। হেপাটাইটিস সি সাধারণত সংক্রমিত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। হেপাটাইটিস ডি কেবল হেপাটাইটিস বি ও এ দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিদেরই সংক্রমিত করতে পারে। এ এবং ই ভাইরাস পানির মাধ্যমে ছড়ায়। সাধারণভাবে বিশ্রামের মাধ্যমে, সিম্পটমেটিক মেডিসিনের মাধ্যমে আমরা এ রোগের চিকিৎসা দিই। যেমন দুর্বল হলে ভিটামিন, খেতে না পারলে বা বমি ভাব থাকলে বমির ওষুধ এবং স্বাভাবিক খাবার খেতে বলি। তবে কিছু ব্যতিক্রম কেইস থাকে। ই ভাইরাস যদি প্রেগন্যান্সিতে হয় তখন জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশ্রাম ও নিয়মিত ওষুধ নিয়ে ধৈর্য ধরে থাকলে ভালো হয়ে যায়। অপচিকিৎসা হিতে বিপরীত হতে পারে।
ডা. ঝুলন বড়ুয়া
কনসালট্যান্ট, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল
লিভার হচ্ছে আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। লিভারে যখন সংক্রমণ ও প্রদাহ সৃষ্টি হয় তখন সেটাকে বলা হয় হেপাটাইটিস। হেপাটাইটিস প্রধানত ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার কিছু রোগের কারণে, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এবং ফ্যাটি লিভারের কারণে হয়ে থাকে। ভাইরাসজনিত কারণগুলোর হচ্ছে হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি ও ই। এছাড়া স্টিয়োটো হেপাটাইটিস ভাইরাস এবং ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণেও হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হেপাটাইটিস ভাইরাসের অনেক পরীক্ষা সরকার সহজলভ্য করে দিয়েছে। যার কারণে লিভার ফাংশন টেস্ট, বিলিরুবিন এইচডিবিজি, এইচবিএসএজি স্ক্যানিং টেস্ট সহজে করা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, লিভার ফাংশন টেস্টের বাকিগুলো- যেমন এইচজিওটি, এলকামিন ফসফ্যাটিস এবং প্রথম ইন টাইম, সিরাম এলবোমিন, গামা জিডি এগুলো সব জায়গায় পাওয়া যায় না। এগুলো বেসরকারি ল্যাবে পাওয়া যায়। হেপাটাইটিস সি, এ, ই, ডি ভাইরাসের যে পরীক্ষাগুলো সেগুলোও সহজলভ্য করা সম্ভব হয়নি। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ডিএনএ এবং সি ভাইরাস আরএনএ এই দুটি পরীক্ষা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাড়া দেশের কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে নেই। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সহজলভ্য। এগুলো অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় সরকারের একার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। আমাদের লিভার কেয়ার সোসাইটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানএগিয়ে আসা উচিত।
ডা. মুশফিকুল আবরার
এসোসিয়েট কনসালটেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব গ্যাস্ট্রো এন্ট্রোরোলজি এন্ড হেপাটোলজি
এভারকেয়ার হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত। ১ মিনিটে প্রায় ৫ জন এবং প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন। মৃত্যুও কম নয়। প্রতিবছর প্রায় ১১ লাখ হেপাটাইটিস রোগী মারা যান। ১৯৮৪ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী- বাংলাদেশের প্রায় ৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত। ওই সময় এ রোগে আক্রান্ত শিশু পাওয়া যায় প্রায় ৪ লাখ। তবে ২০০৩ সালে শিশুদের টিকা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে দেশে হেপাটাইটিস রোগের সংক্রমণ কিছুটা কমে আসে। ২০১৮ সালের সমীক্ষায় দেখা গেছে- বাংলাদেশে এ ভাইরাসে আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে। হেপাটাইটিস রোগের চিকিৎসা আমাদের দেশে সম্ভব এবং খরচও কম। তাই এ রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে যথেষ্ট পারদর্শী এবং বিশেষজ্ঞ লিভার চিকিৎসক রয়েছেন। লিভার প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা চালু হলে লিভার চিকিৎসায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারবে দেশ।
চৌধুরী ফরিদ
সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব
পানি, খাদ্যাভ্যাস, অনিরাপদ যৌনতা ও রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ছড়ায়। এসব বিষয় গণমাধ্যমে প্রচার করলে জনগণ উপকৃত হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সহযোগিতাও দরকার। কারণ চিকিৎসকরা এই বিষয়ে আরও ভালো বলতে পারবেন। বিশেষ করে গ্রামের দাঁতের ডাক্তারদের কারণে হেপাটাইটিস বি বেশি ছড়াচ্ছে। কারণ তারা যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন সেগুলো সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করেন না। রক্ত দেয়ার ক্ষেত্রেও সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে কি না সেটিও দেখা দরকার। যিনি রক্ত দিচ্ছেন তিনি হেপাটাইটিস এ, বি, সি ও ই মুক্ত কি না- এসব দেখতে হবে। লিভার কেয়ার সোসাইটি যদি আমাদের একটি পরিসংখ্যান দেয়- তাহলে আমরা সেগুলো গণমাধ্যমে প্রচার করে মানুষকে সচেতন করতে পারবো।
সাইফুল আলম
চিফ রিপোর্টার, দৈনিক পূর্বকোণ
সচেতনতায় হেপাটাইটিস প্রতিরোধ সম্ভব। চট্টগ্রাম লিভার কেয়ার সোসাইটি কার্যক্রম প্রমাণ করে সচেতনতার দিক থেকে আমরা নগরবাসী এগিয়ে আছি। তবে এই জায়গায় আমাদের অনেক বেশি কাজ করতে হবে। চট্টগ্রামে মানবিক কাজ করে এমন কিছু স্বেচ্ছাসেবক আছেন, তাদেরকে এসব কাজে যুক্ত করতে হবে। ভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধোয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি হাত ধোয়ার বিষয়ে স্কুলের কোমলমতি শিশুদের সচেতন করতে পারি তাহলে তারা অনেক রোগ থেকে বাঁচবে। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা যায় তাহলে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি সচেতন হবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপনা করে তাদেরকে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। এছাড়া সেলুন, রেস্টুরেন্টের মতো জায়গায় পোস্টার, লিফলেট বা স্টিকার লাগিয়ে হেপাটাইটিসের ব্যাপারে জনগণ সচেতন করতে হবে। চিকিৎসকরা চাইলে এসব বিষয়ে পত্রিকায় কলাম লিখতে পারেন। তাতে মানুষ আরও অনেক বেশি সচেতন হবে।
ডা. তারেক শামস
সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন)
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
লিভার কেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ একটি অলাভজনক, অরাজনৈতিক, বেসরকারি, দাতব্য ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি ও ই সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি, রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিভার কেয়ার সোসাইটি কাজ করে যাচ্ছে। লিভার রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে সচেতন করা এবং হেপাটাইটিস ভাইরাস শনাক্ত, টিকা প্রদান ও হেপাটাইটিস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আগামীতে এ জাতীয় কর্মসূচির পরিধি আরও বাড়বে। আশা করি বিশেষজ্ঞদের এসব মতামত লিভার কেয়ার সোসাইটির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ