হরমোন হচ্ছে আমাদের শরীর থেকে নিঃসৃত এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বা রস, যা শরীরের এক জায়গা থেকে নিঃসৃত হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে নিজের কাজ করে। আমাদের শরীরে অনেক ধরনের হরমোন আছে যেমন—থাইরয়েড হরমোন, কর্টিসল হরমোন, টেস্টোস্টেরন হরমোন।
এর মধ্যে কর্টিসল হরমোন আমাদের অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একটি হরমোন, যা আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। যেমন:
১) মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তায় এই হরমোন বেড়ে যায়। এ জন্য একে স্ট্রেস হরমোনও বলা হয়।
২) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এটির ভূমিকা রয়েছে।
৩) শরীরে কোনো ইনফেকশন বা প্রদাহ হলে এই হরমোন তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে।
৪) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন।
কর্টিসল হরমোন কম থাকার লক্ষণ:
১) সব সময় দুর্বল লাগা
২) মাথা ঘুরানো
৩) রক্তচাপ কমে যাওয়া
৪) বমি বমি ভাব
৫) ওজন কমে যাওয়া
৬) শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে যাওয়া
কর্টিসল একটি স্টেরয়েড জাতীয় হরমোন। এই হরমোন অতিরিক্ত পরিমাণ নিলে ( যেমন : শ্বাসকষ্ট বা ব্যথার জন্য অনেকে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ নিয়ে থাকেন) বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে শরীরে। যেমন :
১) শরীর ফুলে যেতে পারে
২) শরীরে লাল লাল ফাটা দাগ দেখা দিতে পারে
৩) ব্লাড প্রেসার বেড়ে যেতে পারে
৪) হাড় ক্ষয়/অস্টিওপোরোসিস হতে পারে
কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার উপায়:
কাজের চাপ, পড়াশোনার চাপ, পারিবারিক বা পারিপার্শ্বিক চাপ—এ সব কিছুই আমাদের মধ্যে স্ট্রেস তৈরি করে। মানসিক অশান্তিতে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হলো :
১) যথাসম্ভব চাপমুক্ত থাকুন। শরীরচর্চা বা মেডিটেশন স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করতে পারে।
২) প্রাণ খুলে হাসুন। কারণ হাসি মানুষকে স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।
৩) অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। নতুন কিছু করুন, শখের কাজগুলো করুন।
যখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন:
১) সব সময় দুর্বল লাগলে
২) ব্লাড প্রেশার কম থাকলে
৩) রক্তে লবণের মাত্রা (সোডিয়াম) কমে গেলে
৪) মাথা ঘুরানো, বমি বমি ভাব হলে
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম, ডায়াবেটিস থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ এবং ডা. সিরাজুল ইসলাম, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মালিবাগ, ঢাকা।
পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ