চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫

কোন উদ্যোগেই পতন থামছে না পুঁজিবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১২:০৭ অপরাহ্ণ

কোন উদ্যোগই যেন কাজে আসছে না পুঁজিবাজারে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান। নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহণের পর পুঁজিবাজার সংস্কারে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

 

এর মধ্যে রয়েছে- বাজারে তারল্য সরবরাহ বৃদ্ধি, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা, লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমানো, অনাদায়ি পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করা, সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করাসহ নানা উদ্যোগ।

 

এতসব উদ্যোগেও পতন থামছে না পুঁজিবাজারে। সরকার পরিবর্তনের পর বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করলেও আশাহত হতে হয়েছে তাদের। ২০২৪ সালের শুরু থেকে ধুঁকতে থাকা পুঁজিবাজারের অবস্থা আরও শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে ৫ আগস্টের পর।

 

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, নতুন সরকার গঠনের পর সবাই আশা করেছে বাজারে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা নানা অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হবে। এতে আস্থা ফিরবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। নিঃস্ব বিনোয়গকারীরা ফিরে পাবেন হারানো মূলধন। গেলো বছরের শেষ দিকে খাদের কিনারায় পৌঁছে গেলেও বিনিয়োগকারীদের আশা ছিল নতুন বছরে সুদিন ফিরবে বাজারে।

 

১ জানুয়ারি বছরের প্রথম কার্যদিবসের লেনদেনে সামান্য উত্থান ঘটে সূচকের। এতে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা কিছুটা বাড়লেও সে গুঁড়ে বালি হতে বেশি সময় লাগেনি। ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে নয় কার্যদিবস। এর মধ্যে ছয় কার্যদিবসেই পতন ঘটেছে।

 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দুই পুঁজিবাজারের প্রায় সবকটি সূচকেরই পতন ঘটেছে। এর মধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৫১ পয়েন্টে নেমে গেছে।

 

অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়া সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।

 

আগের কার্যদিবসের চেয়ে ২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা বেড়ে বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৯১টির। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৭টির এবং ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

দেশের অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই প্রায় ৩৯ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৪০১ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স ১৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৭৬৬ দশমিক ৬১ পয়েন্টে, সিএস-৫০ সূচক ১ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১১০ পয়েন্টে এবং সিএসআই সূচক ৯২৯ দশমিক ৫০ পয়েন্টে নেমেছে। তবে সিএসইতে বেড়েছে সিএস-৩০ সূচক।

 

১ দশমিক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৮৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে সিএস-৩০ সূচক। সূচকের পতন ঘটলেও সিএসইতে গেলো কার্যদিবসের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে লেনদেন। এদিন বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৪ কোটি ৩ লাখ টাকা, গেলো কার্যদিবসে যা ছিল চার কোটিরও কম।

 

গতকাল সোমবার সিএসইতে লেনদেনে অংশগ্রহণ করে ১৯৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ১১৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট