ক্ষমতার পালাবদলে অনিশ্চয়তার মধ্যে আগস্ট মাসে গ্রাহকরা হুমড়ি খেয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তোলা শুরু করেছিলেন; আস্থার সেই সংকট কাটিয়ে এখন আবার তারা ব্যাংকে টাকা জমা রাখছেন।
ব্যাংকাররা বলেছেন, আমানতের বিপরীতে ও বন্ডে বিনিয়োগের উচ্চ সুদহারের পাশাপাশি কিছু ‘দুর্বল’ ব্যাংক ঘিরে গ্রাহকদের মধ্যে যে আস্থাহীনতা শুরু হয়েছিল, তার প্রভাব কমে আসায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চলতি বছর অক্টোবর মাসে ব্যাংক ব্যবস্থায় জমা টাকার পরিমাণ আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৪ হাজার ২০৯ কোটি টাকা বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ব্যাংকে ফেরত এসেছিল ৮ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, অক্টোবর মাসে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, সরকার পতনের পর ১৫ আগস্ট ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ৩ লাখ ১ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। আসলে তখন ব্যাংকখাত নিয়ে গ্রাহকের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিল। তখন সবাই হুমড়ি খেয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। যাদের দরকার ছিল তারাও টাকা তুলে নিয়েছেন, আবার যাদের টাকার দরকার ছিল না, ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে তারাও টাকা তুলে নিয়েছিলেন।
মুখপাত্র বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করলে ব্যাংকখাতে তারল্য সংকট নেই। ইসলামি ধারার ব্যাংকে তারল্য সংকট রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব দুর্বল ব্যাংকগুলোতে তারল্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ বলছেন, ব্যাংকখাত ‘অত্যন্ত সংবেদনশীল’ একটি জায়গা। সরকার পতনের পর আস্থার সংকট থেকেই টাকা তোলার হিড়িক পড়েছিল। এ কারণে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ তখন বেড়ে গিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম ও আমানতকারীদের নিশ্চয়তা দেওয়ার কারণে ব্যাংকখাতে আবার টাকা ফেরত আসছে।
আস্থা ফেরার পাশাপাশি আমানতের সুদ বাড়ার বিষয়টি ব্যাংকখাতে গ্রাহক ফেরার পেছনে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন সিটিজেনস ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মাসুম। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাংকে আমানতের মুনাফা ৮-১১ শতাংশ পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। এতে গ্রাহকরা ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহ পাচ্ছেন।
সূত্র: বিডিনিউজ
পূর্বকোণ/ইব