বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের কারণে সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ব্যাংকারদেরও বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়ি ছিল। তবে সংকট না মিটলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে এখন থেকে ব্যবসায়িক সভা ও দাপ্তরিক কাজে অংশ নিতে বিদেশ যেতে পারবেন ব্যাংকাররা। পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞাও শিথিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালে মে মাসে জারি করা সার্কুলারে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণসহ প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, স্টাডি ট্যুরে অংশগ্রহণের জন্য বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ২০২২ সালে অপর এক সার্কুলারের মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করা হয়।
ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকের খরচে প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, স্টাডি ট্যুরে অংশগ্রহণের জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। তবে, ব্যাংকের বিদেশ ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী স্বীয় ব্যাংকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ কারণে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন।
নিজস্ব অর্থায়নে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে, পবিত্র হজ পালন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সুপারিশে জরুরি চিকিৎসা নিতে বিদেশ যেতে পারবেন। ব্যাংকে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা নিজ দেশে যেতে পারবেন। বিদেশি ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখায় কর্মরত কর্মকর্তারা বিদেশে তাদের প্রধান কার্যালয়ে যেতে পারবেন। বিদেশি প্রতিষঙ্গী ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সভায় অংশগ্রহণসহ দাপ্তরিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এমন সভায় অংশ নিতে ব্যাংকাররা বিদেশ যেতে পারবেন। বিদেশি আয়োজক সংস্থার সম্পূর্ণ অর্থায়নে পরিচালিত প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, স্টাডি ট্যুরে অংশগ্রহণ করতে বিদেশ যেতে পারবেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ ছাড়াও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণ বিষয়ে প্রযোজ্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে বিদেশে কর্মীদের প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, স্টাডি ট্যুরে পাঠানোর নজির খুব বেশি নেই। ব্যাংকের টাকা খরচ করে ব্যবসায়িক সভার নামে বেশিরভাগ ব্যাংকার বিদেশ যান। এটি তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে বিদেশ যেতে পারবেন কর্তারা। এর ফলে এখন ব্যাংকারদের বিদেশ ভ্রমণে আর নিষেধাজ্ঞা নেই, এটা শিথিল বললেই চলে।
পূর্বকোণ/এএইচ