দেশের বেসরকারি আইসিডিগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রাইভেট আইসিডির ক্ষেত্রে কোম্পানি কর হার ২০% বা ২৭ দশমিক ৫% থেকে কমিয়ে ১০% নির্ধারণের প্রস্তাব জানিয়েছেন আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর্টস এসোসিয়েশনের (বিকডা) সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান।
আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ প্রসঙ্গে পূর্বকোণ প্রতিনিধির সাথে ‘বাজেট ভাবনা’ আলোচনায় তিনি এই প্রস্তাবের কথা জানান।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের বেসরকারি আইসিডিগুলো প্রায় শতভাগ কনটেইনারবাহী রপ্তানি পণ্য এবং প্রায় ২৫ ভাগ কনটেইনারবাহী আমদানি পণ্য হ্যান্ডেল করছে। দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের পুরোটাই অর্থাৎ প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক বর্তমানে বেসরকারি আইসিডিগুলোর মাধ্যমে কনটেইনারজাত হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি হয়। একটি আইসিডির জন্য ভ‚মি, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতি, খুচরা যন্ত্রাংশ, ওয়ারহাউস ও বিশাল অপারেশনাল ব্যয় সর্বোপরি বিপুল বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্ত মুনাফা অতীব নগণ্য। অনেকক্ষেত্রে মুনাফা নাই বললেই চলে।
তাই ২০% বা ২৭ দশমিক ৫% কর হার প্রাইভেট আইসিডিসমূহের জন্য একটি বিশাল আর্থিক বোঝা। এ কারণে আইসিডির যথাযথ সেবা দেওয়া অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়েছে। অথচ দেশের প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি ও আমদানি বাণিজ্যের প্রসারের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি আইসিডির অস্তিত্ব অপরিহার্য। দেশের প্রবৃদ্ধি ও অর্থনীতিতে আইসিডিগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিবেচনায় রেখে বেসরকারি আইসিডিগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রাইভেট আইসিডির ক্ষেত্রে কোম্পানি কর হার ২০% বা ২৭ দশমিক ৫% হতে কমিয়ে ১০% নির্ধারণ করা অতীব জরুরি।
নুরুল কাইয়ুম খান আরো বলেন, প্রাইভেট কনটেইনার পোর্টের বিপরীতে উৎসে আয়কর কর্তনের হার বর্তমানে ৮% থেকে কমিয়ে ২% নির্ধারণের দাবি জানাই। কারণ, প্রতিযোগিতামূলক এই খাতে মুনাফা নাই বললেই চলে। এধরনের সেবাপ্রদানকারী করদাতার সংখ্যাও নগণ্য। এ ছাড়াও সব ধরনের সেবায় উৎসে কর কর্তনের আওতায় আনা প্রশাসনিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য নয়। আইসিডি খাতে মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করে যথাযথ আয় দেখিয়ে প্রযোজ্য কর পরিশোধ করে। এর বাইরে উৎসে আয়কর কর্তনের হার ৮% বড় প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে, আইসিডিগুলোর জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির উপর অগ্রিম আয়কর এবং আগাম কর বাতিল করা প্রয়োজন উল্লেখ করে নুরুল কাইয়ুম খান বলেন, আইসিডিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হয়। আইসিডি সেবা বাড়াতে এর বিকল্প নেই। অন্যদিকে এসব মূলধনী যন্ত্রপাতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তার উপর যদি ৫% হারে অগ্রিম আয়কর এবং ৫% হারে আগাম কর আদায় করা হয় তাহলে এ খাতের ব্যবসায়ীরা সেবা বাড়াতে যন্ত্রপাতি আমদানিতে আগ্রহী হবেন না। ফলে সেবার মান বাড়ার চেয়ে সক্ষমতা কমে মান কমতে থাকবে। তাই মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির উপর অগ্রিম আয়কর এবং আগাম কর বাতিল করা প্রয়োজন।
পূর্বকোণ/এসএ