সামনের মাসগুলোতে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে মনে করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এডিবির ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-ডিসেম্বর ২০২৩’ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
সংস্থটি বলেছে, নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও গত জুলাই থেকে অক্টোবরে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের খুব কাছাকাছি ছিল। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখা, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর বিষয়ে উদ্যোগ, খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে আসার কারণে আগামী মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে একই পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। এ অঞ্চলের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখার কারণ হিসেবে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ ও নেপালে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে এডিবির প্রতিবেদনে। এতে ২০২৪ সালে এশিয়া অঞ্চলের মূল্যস্ফীতির পূর্বার্ভাস আগের তুলনায় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ, কাজাখস্থান, মিয়ানমার ও কোরিয়ায় আশঙ্কার চেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতির কথা বলা হয়েছে।
এর আগে গত এপ্রিলে প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে বলা হয়, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওই পূর্বার্ভাসই বহাল রাখে এডিবি।
প্রসঙ্গত, টানা বেশ কয়েক মাস ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। গত জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গড় মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি ছিল। এমন প্রবণতায় সম্প্রতি এর লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধন এনেছে সরকার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে তা এখন ৭ শতাংশের মধ্যে রাখতে চাইছে সরকার।
এদিকে প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কত হতে পারে তা বলা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, রফতানি ও উৎপাদনে মাঝারি প্রবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের ঘাটতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং রফতানি বাজারগুলোতে অর্থনীতির ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমতে পারে।
এদিকে আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ঝুঁকিও এর কারণ হতে পারে বলে মনে করছে এডিবি। এর আগে গত এপ্রিলে প্রকাশিত এডিবির প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরেও এই পূর্বাভাস বহাল রাখে এডিবি।
সম্প্রতি চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও সংশোধন করেছে সরকার। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ