চট্টগ্রাম বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

ব্যবসার লাইসেন্স কমপক্ষে ৫ বছর মেয়াদি করা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ মে, ২০২৩ | ১১:১১ পূর্বাহ্ণ

শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন, আমদানি-রপ্তানি ও ব্যবসা পরিচালনায় বিডার অনুমোদন, টিআইএন, বিআইএন, ফায়ারলাইসেন্স, বন্ড লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র ইত্যাদি ৩৩ প্রকারের লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। তার অধিকাংশই বছরভিত্তিক ইস্যু হয়ে থাকে, যাতে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ও সময় দুটোই ব্যয় হয়। এ সমস্ত অত্যাবশ্যকীয় দলিলাদির অগ্রিম ফি ও কর জমা দিয়ে লাইসেন্সের মেয়াদ এককালীন কমপক্ষে ৫ বছর মেয়াদি করা জরুরি। এতে সরকার একদিকে যেমন অগ্রিম হিসেবে কর ও ফি পাবে, তেমনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। যদিও সরকার ইতোমধ্যে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, আরআরসি, ইআরসি, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ নাগরিক সেবার আরও কয়েকটি আবশ্যিক দলিলাদি বিভিন্ন মেয়াদে প্রদান করছে। একই ভাবে বাণিজ্যিক সব লাইসেন্সের মেয়াদও দীর্ঘ মেয়াদি হওয়া চাই। পূর্বকোণ প্রতিনিধির সাথে আসন্ন বাজেট (২০২৩-২৪) প্রসঙ্গে আলাপকালে ‘বাজেট ভাবনা’য় বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং ম্যানুফ্যকাচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্সে প্রতিষ্ঠানের এককালীন বাৎসরিক বন্ডিং ক্যাপাসিটির উল্লেখ থাকে। কাঁচামালের আমদানি প্রাপ্যতা বছর ভিত্তিক প্রদান করা হয়ে থাকে। আমদানি প্রাপ্যতা জারি করার সময় সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনার অফিস পরীক্ষা নিরীক্ষা কাগজপত্র যাচাই ইত্যাদি কারণে ২/৩ মাস সময় ব্যয় করে। ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে বন্ডেড প্রতিষ্ঠান ১ বছরের পরিবর্তে ৯/১০ মাসের আমদানিপ্রাপ্যতা পেয়ে থাকে। আমদানিপ্রাপ্যতার আলোকে সকল প্রকার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে পণ্য আমদানি করা একটি জটিল ও সময়ক্ষেপণ প্রক্রিয়া। এ কারণে কাঁচামালের আমদানিপ্রাপ্যতা এককালীন ৩ বছরের জন্য প্রদানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

মোহাম্মদ বেলাল আরো বলেন, বর্তমান উৎসে কর ১% হারে কর্তন করায় মূলধন চূড়ান্ত কর নিষ্পত্তির সময় পর্যন্ত ব্লক হয়ে যায়। যেহেতু চূড়ান্ত কর অগ্রিম কর্তিত কর ও নিয়মিত করের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, সেহেতু উৎসে কর কর্তনের হার আগামী ৫ বছরের জন্য ০.২৫% হারে ধার্য করা জরুরি। পাশপাশি বর্তমানে যে ৩৫টি পণ্য ও সেবা খাতে নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে তার সাথে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং সেক্টরের অনুকূলে রপ্তানি প্রণোদনার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

বিজিএপিএমইএর বাজেট প্রস্তাবনায় তিনি আরো যেসব প্রস্তাব রাখেন সেগুলো হলো- ওয়েসটেজ সামগ্রীর উপর বর্তমানে যে ১৫% ভ্যাট বলবৎ রয়েছে তা প্রত্যাহার করা। বর্তমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় রপ্তানিকারকদের সক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে ইডিএফ লোন ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নতীকরণপূর্বক সুদ হার ৩.৫% এ ধার্য করা। ব্যক্তি পর্যায়ে করমূক্ত আয়ের সীমা ৩ লক্ষ টাকা হতে ৪ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা। প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকগণ কর্তৃক এফডিডি/টিটি’র মাধ্যমে প্রাপ্ত রপ্তানি আয় অন্তর্ভূক্ত করে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট হতে ইফটিলাইজেশন পারমিশন প্রদানের ব্যবস্থা চালু করা। পোশাক প্রস্তুতকারকদের ন্যায় এ সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের কন্টিনিউয়াস বন্ডের সুযোগ না থাকায় উৎপাদন কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। ফলে রপ্তানি আয় কমে যায়। এ কারণে এ সেক্টরের অনুকূলে কন্টিনিউয়াস বন্ডের সুবিধা প্রদান করা প্রয়োজন। সরাসরি রপ্তানিকারক বন্ডারের ন্যায় প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক বন্ডারগণ অস্থায়ী /স্থায়ী আন্তঃবন্ড স্থানান্তরের সুবিধা প্রাপ্ত হলে আমদানিকৃত কাঁচামালের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত সম্ভব হয়। এ কারণে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারী বন্ড প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অস্থায়ী/স্থায়ী আন্তঃবন্ড স্থানান্তরের সুবিধা প্রদান করা প্রয়োজন।

পূর্বকোণ/এ

শেয়ার করুন