দেশের ডেইরি শিল্প রক্ষায় গুঁড়োদুধ আমদানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে উল্লেখ করে চিটাগাং ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাঈম উদ্দিন বলেন, এক কেজি ভালো মানের ফুলক্রিম গুঁড়োদুধ আট লিটার তরল দুধের সমপরিমাণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই সে হিসেবে গুঁড়োদুধ, তরল দুধের মূল্যের সাথে বিবেচনা করে গুঁড়োদুধের আমদানি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পূর্বকোণ প্রতিনিধির সাথে আসন্ন বাজেট (২০২৩-২৪) প্রসঙ্গে আলাপকালে ‘বাজেট ভাবনা’য় তিনি এ কথা বলেন।
ডেইরি শিল্পের সংকট থেকে উত্তোরণে আমদানি গুঁড়োদুধের পাশাপাশি আমদানি ফ্রোজেন মাংসও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়া গো-খাদ্যের যোগান দিতে ঘাসের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ঘাস উৎপাদনে গবেষণা বাড়াতে হবে। এছাড়া অব্যবহৃত উপকূলীয় এলাকা বা কোস্টাল এরিয়া এবং পাহাড়ি এলাকাকে এই ঘাস উৎপাদনে কাজে লাগাতে হবে বলে উল্লেখ করেন নাঈম উদ্দিন।
এছাড়া, সাইলেসে (প্রক্রিয়াজাত কাঁচা ঘাস) আরো সুনজর দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ইসরাইলি ফ্রিজিয়ান গাভী থেকে প্রতিদিন প্রায় ১শ লিটার দুধ পাওয়া যায়। আমাদের দেশে তরল দুধের উৎপাদন বাড়াতে হলে এ জাতীয় ভালো মানের গরুর কম্পোজিট ব্রিজ নিয়ে আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী করে গাভীর ব্রিজ করাতে হবে। এ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ডেইরি শিল্প প্রসঙ্গে নাঈম উদ্দিন বলেন, ফার্মগুলোর খরচ কমাতে অবশ্যই বিদ্যুতের বাণিজ্যিক ইউনিট রেট থেকে কৃষি ইউনিট রেটে রূপান্তর করতে হবে। সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। গরুর প্রাণিবিমা চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় নতুন যেসব তরুণ খামারি উদ্যোক্তা হতে এই শিল্পে যোগ দিচ্ছে তাদের নিজেদের টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি নতুন তরুণ খামারিদের ভালো মানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
ডেইরি ফার্মের ভ্যাক্সিনেশন প্রসঙ্গে নাঈম উদ্দিন বলেন, সরকারিভাবে ডেইরি শিল্পের জন্য ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করে ভ্যাক্সিনের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ভ্যাক্সিনের দাম, মান ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে এর বিকল্প নেই। পাশাপাশি এর যথাযথ প্রয়োগ ও ডেইরি শিল্পের স্বার্থে ইউনিয়ন পর্যায়ে ডেটেরিনারিয়ান নিয়োগ দিতে হবে।
তিনি বলেন, খামারে আধুনিক প্রযুক্তির সব উন্নত সুবিধা ব্যবহারের জন্য সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। এতে খামারে গরু ও গাভীকে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং গবেষণা করা যাবে। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়িয়ে এখনই সময় বিদেশে মাংস রপ্তানিতে মনোযোগী হওয়া। কারণ অনেক দেশ বাংলাদেশের মাংস কিনতে চায়।
পূর্বকোণ/এ