চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

দুই বছরে জাহাজ ভিড়েছে ১১৪টি রাজস্ব আদায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা

এ.এম হোবাইব সজীব, মহেশখালী

৯ মে, ২০২৩ | ১২:২৫ অপরাহ্ণ

সাগরের কোলঘেঁষে ক্রমেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্র বন্দর। মাতারবাড়ি, যেটি ছিল কক্সবাজার জেলার মহেশখালী দ্বীপের অনেকটা অপরিচিত একটি জায়গা। দেশের ক’জন মানুষ শুনেছিল এ জায়গাটির নাম? একদা অপরিচিত এ মাতারবাড়িই হতে যাচ্ছে অর্থনীতির গেম চেঞ্জার। জাপানের ‘বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট’ বা বিগ-বি ধারণায় বদলে যাচ্ছে। মহেশখালী, সেখানে গড়ে উঠছে গভীর সমুদ্রবন্দর ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে শুধু মাতারবাড়িই বদলাবে না, এই মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হবে দেশের অর্থনীতির অন্যতম হাব। দিনের পর দিন দেশি -বিদেশি শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ও পাশের লাগায়ো তাপ ভিত্তিক কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে বাংলাদেশসহ এতদঞ্চলের ৩ বিলিয়ন মানুষ উপকৃত হবে। জীবনযাত্রা মানের প্রসার ঘটবে।

জানা গেছে, গত দুই বছরে ১১৪ টি জাহাজ ভিড়েছে। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্প পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে মহেশখালী দেশের একটি শিল্প সমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আর কক্সবাজার হবে উন্নয়নের রোল মডেল।

এই বন্দরের সুফল ভোগ করবে দেশ এবং বিদেশের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ। অসংখ্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এখন আলোচনার শীর্ষে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। স্থানীয় বাসিন্দারা এখন স্বপ্ন দেখছেন গভীর সমুদ্র বন্দর পুরোদমে চালু হলে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অন্তত এর সুফল ভোগ করবে।

সম্প্রতি ৮০ হাজার টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৬৩ হাজার টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে ভিড়েছে। বন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা সন্দেহ থাকলেও সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আন্তরিক উদ্যোগে এই প্রকল্প দ্রুতই বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই গভীর সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব ও প্রধানমন্ত্রীর সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মাঝে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিক। যার ফলে জমি অধিগ্রহণেও কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হলে অন্যান্য বন্দর থেকে এর দূরত্ব বেশি হবে না। চট্টগ্রাম থেকে সমুদ্রপথে মাতাবাড়ির দূরত্ব ৩৪ নটিক্যাল মাইল, পায়রা বন্দর থেকে মাতাবাড়ির দূরত্ব ১৯০ নটিক্যাল মাইল ও মোংলাবন্দর থেকে গভীর সমুদ্রবন্দরের দূরত্ব ২৪০ নটিক্যাল মাইল। তাই মাতারবাড়িতে মাদার ভেসেল বৃহদাকার কন্টেইনার জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে অল্প সময়ের মধ্যে সড়ক ও সমুদ্রপথে অন্যান্য বন্দরে পরিবহন করা যাবে। পুরোদমে মাতারবাড়ি বন্দর চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। পরিসংখ্যান বলছে গভীর সমুদ্রবন্দর জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে দুই থেকে ৩% অবদান রাখবে। গত দুই বছরে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে এই বন্দর থেকে।

পূর্বকোণ/এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট