আইআইইউসি’র মূল লক্ষ্য হচ্ছে জ্ঞানের সঙ্গে নৈতিকতার সমন্বয় ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশাত্মবোধ, মানবতাবোধ, সততা, বিজ্ঞানমনস্কতা, দক্ষতা এবং জীবন- ধর্মিতা সৃষ্টি করা। যাতে ধর্ম ও বিজ্ঞানের আলোকে তারা আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। একথা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, আইআইইউসি- সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে সাফল্যের সাথে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) আয়োজনে ইফতার ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী এসব কথা বলেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১১ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন উল্লেখ করে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী বলেন, এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট ল্যাব, আনলিমিটেড ইন্টারনেট সুবিধা, প্রায় ২ হাজার ৩২৯টি জার্নাল, ১ লাখ ১৪১টি বই, ৩৫ হাজার ৫০০ ই-জার্নাল, ৪৫ লাখ ই-থিসিসে এক্সেস এবং নান্দনিক স্থাপত্য শৈলীর লাইব্রেরি নিয়ে সমৃদ্ধ এই বিশ্ববিদ্যালয়। দেশি শিক্ষার্থীর পাশাপাশি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চীন, নেপাল, শ্রীলংকা, নাইজেরিয়া, সোমালিয়ার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি ছাত্রও রয়েছে।
গবেষণায় প্রতিবছর ১ কোটি টাকার অধিক ব্যয় করা হয় উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, উচ্চশিক্ষায় গবেষণাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। গবেষণা কাজকে বিশেষভাবে প্রমোট করার জন্য সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন্স (সিআরপি) নামে আলাদা একটি ডিভিশন রয়েছে। যার বাৎসরিক ব্যয় এক কোটি টাকার অধিক। বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের অংশগ্রহণে আমরা সফলভাবে ১৭টি ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছি।
উচ্চ শিক্ষায় ইচ্ছুক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিবছর দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে প্রায় ৪ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা এবং বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়াও, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমেরিকা, কানাডা, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, নেপাল, তুরস্ক, ব্রুনাইসহ বিশ্বের স্বনামধন্য ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক রয়েছে।
আইআইইউসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোসতাক খন্দকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে জাতি ১৬ বছর বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছিল একজন তথাকথিত এমপি। তারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎসহ যে ক্ষতি করেছে তার বিচার করতে হবে।
ট্রেজারার ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্টদের দোসর আবু রেজা সপরিবারে প্রতিমাসে ১৫ লাখ টাকা করে তুলেছে। লুটপাট করেছে। দুইটি লিফট কিনেছে ১ কোটি টাকায়। সেই লিফটের খোঁজ পাইনি। ক্যাম্পাসের গাছ, জমি বিক্রি করে খেয়েছে। ১০০ কোটি টাকার দায় আমাদের মাথার ওপর রেখে গেছে।
দৈনিক পূর্বকোণের চিফ রিপোর্টার ও হেড অব অনলাইন সাইফুল আলম বলেন, চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় চলে যান। আমার ধারণা ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালগুলোর মত আইআইইউসিরও শিক্ষক, অবকাঠামোগত সুবিধা ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। আমি আইআইইউসি কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাবো আপনারা গতানুগতিক বিষয়ের বাইরে যদি বন্দর-শিপিং, ট্যুরিজম, পাহাড়ি কৃষি বিষয়ক বিভাগ নিয়ে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করেন, তবে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের বাইরে যেতে হবে না। তারা চট্টগ্রামেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও ক্যারিয়ার গড়তে পারবে।
অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার কর্নেল মোহাম্মদ কাসেম, প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং ডিভিশনের পরিচালকবৃন্দ।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ