‘তুই প্রফেসরগিরি দেখাস আমার সাথে, তোর সাথে দুষ্টামির সম্পর্ক আমার, ফাজিল কোথাকার’, ‘তুই আমাকে বেয়াদব বললি কেন? তুই বেয়াদব বলার কে?’ ননসেন্স তো তুই- এভাবেই ওশানোগ্রাফি বিভাগের সিনিয়র এক শিক্ষককে হুমকি ধমকি দিতে দেখা যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মেরিন সায়েন্স ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম সরকারকে।
গত ২৬ নভেম্বর ওশানোগ্রাফি বিভাগের সভাপতির কক্ষে বিভাগটির সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও এসেছে পূর্বকোণের হাতে।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক চবি মেরিন সায়েন্স ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম সরকার। শিক্ষক থেকে মাফিয়া হিসেবেই ক্যাম্পাস ও ইন্সটিটিউটে তিনি বেশি পরিচিত। ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক উপ-কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
অভিযোগ রয়েছে- স্বৈরাচারের সময়ে তার রুম ছিল আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস রুম। আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে ডিপার্টমেন্ট থেকে বয়কট করা হয় তাকে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দুই মাস আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার নিয়মিত ক্লাসে ফিরেন।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান ওশানোগ্রাফি বিভাগে পরিদর্শনে যান। তবে উপ-উপাচার্যের যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে সাইদুল ইসলামের বিভাগে দেরিতে আসার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি অধ্যাপক ড. মোসলেম উদ্দিনের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওশানোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোসলেম উদ্দিন বলেন, গত ২৬ নভেম্বর ওশানোগ্রাফি বিভাগে চবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান স্যার ভিজিটে আসেন। এর পূর্ব মুহূর্তে বিভাগে দেরিতে আসার কারণ জিজ্ঞেস করতেই সাইদুল ইসলাম আমার সাথে গালিগালাজ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ ছাড়া আমাকে দেখে নেয়ারও হুমকি-ধমকি দেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রোভিসিদের নিয়েও তিনি অত্যন্ত আপত্তিকর ভাষায় কটূক্তি করেন।
এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, ড. মোসলেম উদ্দিন আগে আমাকে বেয়াদব বলেছেন। তুই-তোকারি করে কথা বলেছেন। তারপর আমি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম সরকার আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোর বিরোধী ছিলেন। এজন্য ওশানোগ্রাফি বিভাগ থেকে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। তবে ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতি নমনীয় হওয়ায় তিনি ক্যাম্পাসে আসেন।
পূর্বকোণ/জুনায়েদ/জেইউ/পারভেজ