চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় চাকসু কেন্দ্রের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানিক আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার এবং প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে চাকসু কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ‘বিপ্লব-পরবতী বাংলাদেশে গণমাধ্যমের যেমন সংস্কার চাই’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক সভাপতি ও উক্ত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল হক এবং ‘বিপ্লব-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী আর রাজী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী, চবি প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, চবি ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, চবি অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের প্রভোস্ট এ. জি. এম. নিয়াজ উদ্দিন, চবি পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম এবং উক্ত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহাব উদ্দিন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করেছে। বর্তমান সাংবাদিকদের মধ্যে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং সিরিজ সাংবাদিকতা দেখতে না পাওয়ায় হতাশ হই আমি। এ ধরনের রিপোর্ট না হওয়ার কারণে সমাজে অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন ইত্যাদি বেড়েই চলছে। তিনি সাংবাদিকদের পোষা সাংবাদিক না হয়ে অনুসন্ধানী সিরিজ রিপোর্টের মাধ্যমে টিআইবি’র মত সম্মানজনক পুরস্কার অর্জনের পরামর্শ দেন।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বিগত সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সাংবাদিকদের চাপ প্রয়োগ করে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল এটা খুবই দুঃখজনক। সরকারের জুলুম অন্যায়সহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ জোগান দিয়েছে। একটি রাষ্ট্রের চরিত্র যখন নষ্ট হয় তখন সাংবাদিক, আমলা, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ দেশ থেকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়, এমনটা আমাদের প্রত্যাশা ছিলো না।
চবিসাস সভাপতি মোহাম্মদ আজহার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল আমাদের নিজেদেরকে ভেঙে নতুন করে গড়ার আন্দোলন। আমরা সংবাদের জন্য সংবাদ মাধ্যমের ওপর নির্ভর ছিলাম। কিন্তু জুলাই আন্দোলনে আমরা একজন ব্যক্তি একটি মিডিয়ার ভূমিকা পালন করেছি। চবি সাংবাদিক সমিতি একটি মিডিয়ার ভূমিকা পালন করেছে। যে সাংবাদিক সমিতির পেজে শুধু বিবৃতি ছাড়া কিছু যেত না, সেই পেজ প্রতিদিন লাইভ সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের খবর সারা বাংলাদেশের মানুষের নিকট পৌঁছে দিয়েছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সাংবাদিকরা এই কাজ করেছে। আমাদের এই কলমের লড়াই সবসময় অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়াজ মোহাম্মদ, চবি সংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু, চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল নোমান, চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাষ্ট্রচিন্তা, চবি’র সভাপতি এসবি ফররুখ হোসেন রিফু ও চবি গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের প্রতিনিধি ধ্রুব বড়ুয়া।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ