কোটা সংস্কার আন্দোলনে গণহত্যাকে সমর্থনের অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আইন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভকে অব্যাহতির দাবি জানিয়ে আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আইন অনুষদের দেয়ালে দেয়ালে রোমানকে অপসারণের পোস্টার দেখা যায়। হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভ এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ছিলেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অবস্থান কর্মসূচি থেকে তারা ডিন বরাবর রোমানের অপসারণের দাবি জানিয়ে দরখাস্ত দেয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভর বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আনেন।
অভিযোগগুলো হল-
১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পতন হওয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের কর্মকাণ্ড ও ২৪ এর গণহত্যাকে সমর্থন দেওয়া এবং ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে কাজ করা।
২. ছাত্রদের নিজের বাসায় ডেকে মাদকের আসর বসানো এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছাত্রদের ব্যক্তিগত জীবন ও আইন বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষকদের নিয়ে অকথ্য ভাষায় কথা বলা গালিগালাজ করা। এমনকি অনেক ছাত্রকে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করা।
৩. ছাত্রলীগকে মদদ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়া এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা।
৪. ক্লাস চলাকালীন এবং নিজ অফিস কক্ষে ডেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ট্যাগ দেয়া (যেমন জামায়াত/শিবির এর এজেন্ট এবং অন্যান্য), বিভিন্নভাবে হয়রানি করা এবং ক্লাসের মধ্যে ছাত্রদের টার্গেট করে হেয় প্রতিপন্ন করা।
৫. প্রক্টর থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং ক্যাম্পাসের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়ার মাধ্যমে সাধারণ ছাত্রদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হয়রানি করা।
৬. ছাত্রদের রেজাল্ট নিয়ে হুমকি দেওয়া, ভয়ভীতি প্রদর্শন করা।
৭. শিক্ষক হিসেবে তার একাডেমিক ও নৈতিকদায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা।
আন্দোলনকারী আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, রোমান শিক্ষক নামের কলঙ্ক। নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীকে নানা সময় শিবির ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করেছেন। এমনকি জুবায়ের নামে এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছেন। কোটা আন্দোলনের সময় প্রত্যক্ষভাবে শিক্ষার্থী হত্যা সমর্থন করেছেন। এমন শিক্ষকের ক্লাস আমরা চাই না।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভকে একাধিকবার কল করা হলেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি আবেদন করেছে। আমি সেটা গ্রহণ করেছি। এটি একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তদন্ত হবে এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্বকোণ/জুনায়েদ/জেইউ/পারভেজ