মানব সভ্যতার আদি লগ্ন থেকে আজ অবধি ক্রমাগত অগ্রযাত্রার যে ধারা বহমান, তার মূল ভিত্তি গবেষণা। পৃথিবীর ইতিহাসের অগ্রগতির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষ, আর তা সম্ভব হয়েছে গবেষকদের জন্য। গবেষণার মাধ্যমে অজানাকে জানা, নতুন উদ্ভাবন, রাগ-শোক-জরাকে জয় করা সম্ভব হয়েছে।
‘গবেষণা’ শব্দটাই কাটখোট্টা, কেমন যেন কাঠিন্যে ভরা। আমার মত অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যেই গবেষণা নিয়ে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। তাই সেই ভয়কে জয় করতে, আমরা পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের চার সহপাঠী দুই শিক্ষকের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলাম।
এ সম্মেলনে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মোট ২৬টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে সংবাদপত্রের বর্তমান সমস্যা ও বৈশ্বিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে সংবাদমাধ্যমের নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা।
ম্যাস মিডিয়া রিসার্চ কোর্স পড়ার সময় জুয়েল দাশ স্যার প্রায়ই বলতেন গবেষণা মানেই শুধু চোখে চশমা এঁটে বইপুস্তকে মুখ গুঁজে থাকা নয়, গবেষণা মানে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের একটি শিল্প। স্যারের কথার ব্যবহারিক সত্যতা সেখানে গিয়েই বুঝতে পেরেছিলাম। জুয়েল স্যার নিজেই হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য সংবাদ নিয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন সম্মেলনে। অপরদিকে বিভাগের আরেক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক প্রশান্ত কুমার শীল স্যারও উপস্থাপন করেন ফিল্ম সেন্সরশিপ সম্পর্কিত আরেকটি গবেষণা প্রবন্ধ।
শুধু নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নয়, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আগত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও আগ্রহ নিয়ে আমাদের সময় দিয়েছেন। এর ভিতরই জাবিতে সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফিন ইশার সঙ্গে দেখা হল। ইশার সঙ্গে গল্প করতে করতেই জানতে পারলাম গবেষণা নিয়ে তার আগ্রহের কথা, বিদেশে পড়তে আসার জন্য অনেক স্কলারশিপ বা বৃত্তি আছে, তাই সে নিজেও গবেষণা নিয়ে অনেক আগ্রহী।
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ কামরুল হোসাইন বলেন, পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কনফারেন্সে যোগদান করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। এই কনফারেন্স সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেছিলেন পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সিনিয়র লেকচারার প্রশান্ত কুমার শীল স্যার। বিভাগের চেয়ারম্যান জুয়েল দাশ স্যার ও প্রশান্ত স্যারের সহযোগিতায় কনফারেন্সে অংশগ্রহণের সুযোগ মিলে। দুইদিন ব্যাপী এই কনফারেন্সের মাধ্যমে হাতে কলমে সাংবাদিকতা এবং গবেষণা নিয়ে নানান কিছু শিখতে পেরেছি। আয়োজক, আমাদের শিক্ষক এবং সহপাঠীদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শক্তি দে বলেন, শিক্ষা শুধু পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ থাকে না। জ্ঞান অর্জনের জন্য গবেষণা ও গবেষণামূলক কনফারেন্সগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন থেকে আমি আমার জ্ঞানের ঘাটতি অনেকটা পূরণ করতে পেরেছি।
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ঈশা কামাল বলেন, নতুন কিছু শিখতে বরাবরই আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। তার চেয়ে বেশি ভালো লাগে নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পেরে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের আমার দুই শিক্ষক সিনিয়র লেকচারার প্রশান্ত কুমার শীল এবং বিভাগের চেয়ারম্যান জুয়েল দাশ স্যারের কাছে আসলেই আমি কৃতজ্ঞ। যাদের মাধ্যমে আমি এই শিক্ষণীয় এবং তথ্যবহুল আলোচনার অংশ হতে পেরেছি। সাংবাদিকতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মিলনায়তন হয়ে উঠেছিল সম্মেলনটি।
লেখক: পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী।
পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ