চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

কুরআন নাযিলের মাসে কুরআন তিলাওয়াত ও অনুসরণ করতে হবে

রায়হান আজাদ

১০ মে, ২০১৯ | ১১:৩৯ অপরাহ্ণ

কুরআন আরবী শব্দ। এর অর্থ বহুল পঠিত অথবা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আভিধানিক দুটি অর্থই কুরআনের সাথে যথেষ্ট সংগতিপূর্ণ। সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যাবধি এমন কোন বই-পুস্তক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যা আল কুরআনের মত এত অধিকহারে পৃথিবীর সর্বত্র পঠন-পাঠন গবেষণা ও অনুশীলন হয়েছে। অন্যদিকে কুরআনের প্রতিটি হরফ, কালেমা, আয়াত, রুকু ও সুরা একটি অন্যটির সাথে অর্থ, ভাব ও রচনায় অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পৃক্ত ।
কুরআন শরীফ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বাণী। এটি সর্বশেষ বড় আসমানী গ্রন্থ। মহানবী হয়রত মুহাম্মদ মোস্তফা সা. এর উপর নবুয়তী জিন্দেগীর ২৩ বৎসর ধরে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত সাইয়েদুল মালায়েকা হযরত জিবরাঈল আ. মারফত আল কুরআন ধাপে ধাপে অবতীর্ণ হয়। আল্লাহ পাক বলেন, ‘নিশ্চয় কুরআন মজীদ এক অতি সম্মানিত ফিরিশতা কর্তৃক পৌঁছানো বাণী, যিনি অহীর গুরুভার বহনে সক্ষম এবং আরশের অধিকারী সত্তার কাছে রয়েছে তাঁর উচ্চ মর্যাদা। তিনি সেখানে গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব এবং বিশ্বস্ত’। (সুরা তাকভীর) ভাষণ, সংকলন ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আল কুরআন সন্দেহাতীতভাবে সত্য প্রমাণিত। দীর্ঘ দেড় হাজার বছর পূর্বে আল কুরআন নাযিল হলেও অদ্যাবধি তার কোন ধরনের পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংকোচন, বিকৃতি কিংবা রূপান্তর ঘটে নি। কিয়ামত পর্যন্ত এটি নির্ভুল ও অবিকৃতভাবে সংরক্ষিত থাকবে। আর, এ দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ পাক। তিনি বলেন, ‘ইন্না নাহনু নায্যাল নায্ যিকরা ওয়া ইন্না লা হাফিজুন’-অর্থাৎ এ কুরআন নাযিল করেছি আমি আল্লাহ, আর এর হেফাজতের দায়িত্বটাও আমার।
আল কুরআন শুধু মুসলমান নয়, সর্বকালের সমগ্র মানবতার জন্য বিশ্ব জাহানের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ হতে সর্বোত্তম হাদিয়া। আর এটি মাহে রমজানেরও অনন্য অনুগ্রহ। মানবজাতির সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি যত বই-পুস্তক শাস্ত্রের অস্তিত্ব পাওয়া যায় তন্মধ্যে কুরআনুল কারীম যুগশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক পঠিত। যুগে যুগে আল কুরআনের যত হাফিজ (মুখস্থকারী) পাওয়া যায় তা অন্য কোন গ্রন্থের ক্ষেত্রে কল্পনাও করা যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিশ্ব মানবতার ইহ-পারলৌকিক শান্তি ও মুক্তির জন্য পবিত্র মাহে রমজানেই কুরআনে করীম নাজিল করেন। মহান প্রভু বলেন, ‘রমজান মাসই হচ্ছে সে-ই মাস যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআনে কারীম, যা মানুষের জন্য হিদায়াত এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসে রোজা রাখবে। -সুরা আল বাকারা : ১৮৫। অনুরূপভাবে সুরাতুল ক্বাদরে আল্লাহ ছুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা বলেন,‘ নিশ্চয় আমি লাইলাতুল ক্বাদরে কুরআন নাজিল করেছি।’ অসংখ্য হাদীস ও ইসলামী চিন্তাবিদদের বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত যে, লাইলাতুল ক্বাদর তথা মহিমান্বিত রজনী পবিত্র রমজান মাসেই নিহিত রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট