চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

অকটেন দিয়ে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার মামলা

অবশেষে আসামি ‘ঘাতক’ স্বামী রবিউল গ্রেপ্তার সাতকানিয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা হ সাতকানিয়া

১৯ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:২৫ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় গায়ে অকটেন ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার মামলায় ঘাতক স্বামীকে পলাতক অবস্থা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি হলেন, রবিউল হোসেন (২৯)। তিনি উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গারাঙ্গিয়া কেরানীপাড়ার নুরুল আলম প্রকাশ নুরু সওদাগরের ছেলে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফকিরামুড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাতকানিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে সিএনজি অটোরিক্সা চালক রবিউল ইসলাম ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নিজ স্ত্রী তছনুর আক্তার সুমি (২০)কে ঘুমন্ত অবস্থায় বিকাল ৩টার সময় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন

লাগিয়ে দেয়। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে সুমিকে তার পরিবারের সদস্যরা প্রথমে চমেক হাসপাতাল ও পরে ঢাকা বারডেম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করান। ওখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই মাসের ১৭ তারিখ রাত আড়াইটার সময় সুমি মারা যান। এ ব্যাপারে তছনুর আক্তার সুমির ছোট ভাই রিয়াদ হোসেন বাদি হয়ে স্বামী রবিউল হোসেনকে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা (মামলা নং-১১ তারিখ-১২/২/১৯ইং) দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে পুলিশি গ্রেপ্তার এড়াতে রবিউল আত্মগোপনে ছিল। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ফকিরা মুড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে বোনের বাড়ি থেকে রবিউলকে গ্রেপ্তার করেন।

এ ব্যাপারে মামলার বাদি, তছনুর আক্তার সুমির ছোট ভাই রিয়াদ হোসেন বলেন, আমার বোনের নাম দিয়ে তার স্বামী প্রথমে একটি এনজিও সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে সময়মত পরিশোধ করেননি। আবারও বোনকে ঋণ নিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দিলে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরে ঘটনার দিন আমার বোন তার শ্বশুর বাড়ির খাটের মধ্যে শুয়ে পড়ে। এর মধ্যে তার স্বামী রবিউল ঘরের বাইরে থাকা সিএনজি চালিত ট্যাক্সি থেকে অকটেন নিয়ে তার গায়ে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা বারডেম হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বোন মারা যায়। তাদের সংসারে তাবাচ্ছুম ইসলাম নামে সাড়ে ৩ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। আমি এবং আমার পরিবার এ খুনি স্বামীর সঠিক বিচার সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।

সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আসামি রবিউল ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিল। বহু কষ্ট আর চেষ্টার ফলে গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে লোহাগাড়ার চুনতি ফকিরামুড়া তার বোনের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার সকালে রবিউলকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট