একসময় মহলটি নাচ, গান আর রাজাধিরাজদের পদচারণায় ছিল মুখরিত। আলোর ঝলকানি ছিল মহলজুড়ে। সুরের মূর্ছনায় ঘুঙুর পরে নাচতো বাঈজিরা। এভাবেই তারা আনন্দ দিতেন জমিদার সাজ্জালেলাকে। প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো এ ভবনটি নগরীর চকবাজার চন্দনপুরা পুরাতন ফায়ার সার্ভিসের পাশেই অবস্থিত। দোতলা বিশিষ্ট এ ভবনটি বর্তমানে প্রায় জরাজীর্ণ। নানা কারুকাজে শোভিত। দেয়ালে দেব-দেবী আর ফুলের ছবি। ভবনটির দরজা জানালা সবই নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো কালের স্বাক্ষী হয়ে ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে। ভবনটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। তবে বর্তমানে ভবনটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত হওয়ার কথা আছে। জানা গেছে, এটি জমিদার বাড়ি হলেও আসলে জমিদার সাজ্জালেলার নাচ ঘর হিসেবেই ব্যবহৃত হতো। এখানে বাঈজিদের জন্য আলাদা সাজ ঘর রয়েছে। দোতলা ভবনে অতিথি কক্ষসহ রয়েছে ১৪টি কক্ষ। নাচ ঘরের চারদিকে ১০টি দরজা দিয়ে প্রবেশ করা যায়। ওপরে ওঠার জন্য ভবনের এক কোণে একটিমাত্র সিঁড়ির ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে।
চকবাজারের বয়স্ক স্থানীয় বাসিন্দা আবু সুফিয়ান বলেন, জমিদার সাজ্জালেলার দাদা ছিলেন এ এলাকার জমিদার। চকবাজার নিয়ে চন্দনপুরা, আন্দরকিল্লা, নিউ মার্কেট, বাকলিয়াসহ আরো কিছু এলাকায় তার জমিদারি ছিল। দাদা ও বাবার সূত্রে জমিদারি লাভ করেন তিনি। তাঁর দাদার আমলে এই জমিদার বাড়িটি নির্মিত হয়। বর্তমানে বাড়িটি পরিত্যক্ত। একসময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় অগ্নিনির্বাপক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। এখন এটি প্রস্তাবিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত হওয়ার কথা আছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া সম্মনয়কারী) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত করার কথা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে ব্যবহৃত পুরানো মেশিনারি সব জিনিস সেখানেই যত্ন করে রাখা হয়েছে। ভবনটি জাদুঘর করার জন্য যেসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায় করতে একটু সময় লাগছে। এসব অফিসিয়ালি কাজ শেষ হলে সম্পুর্ণভাবে কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।