চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

এমপিদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ মে, ২০১৯ | ২:৪০ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় সাংসদদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। অপরদিকে, গত উপজেলা নির্বাচনে যারা নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানানো হয় সভায়। গতকাল নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ, মহানগর, তিন পাবর্ত্য জেলা এবং কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এই ক্ষোভ ঝাড়েন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, “আমি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই সময়ে বোধহয় দক্ষিণে আমিই সবচেয়ে প্রবীণ নেতা। কিন্তু আমি চাইলে কোন অসহায় কর্মী-সমর্থককে এক ছটাক গম দিয়ে সাহায্য করতে পারি না। সব এমপিদের হাতে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চার বার দেশ পরিচালনা করছে। সরকার পরিচালনাকালে দেশের উন্নয়ন হয়েছে সে হারে জনপ্রিয়তা বাড়েনি। জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে না তা খতিয়ে দেখতে হবে।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা বলেন, রাঙামাটিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করছেন। সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত কয়েকজন নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে তিনি বলেন, রাঙামাটিতে তারা চরম আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। একদিকে, শান্তিবাহিনীসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী দল তাদেরকে নানাভাবে তটস্থ রাখে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে এসব বিষয় অবহিত করা হলেও কেন জানি তারা চুপ করে আছেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে দেশের যে পরিমাণ অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে সেভাবে সাধারণ মানুষের মানসিক উন্নতি হয়নি। মানুষ অনেক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ইত্যাদি সুযোগ মানুষ পাচ্ছে। মানসিকতার উন্নয়নটা দল হিসেবে আমরা বেশি পরিবর্তন করতে পারি নাই। এই দায়িত্ব আমাদের সংগঠনের সকলের। কি কারণে মানুষ উন্নয়নের বার্তাটা পাচ্ছে না। মানসিকতার পরিবর্তনটা করতে পারছি না তার কারণ উদঘাটন করে সেই ঘাটতি পূরণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, শৃঙ্খলা সংগঠনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দল হিসেবে নেতাকর্মীদের যেভাবে দলের আদর্শ অনুসরণ করা দরকার তা অনেকেই করছি না। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের জন্য দরকার শিক্ষা এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ। কিছু সংখ্যক লোক যারা ক্ষমতার বলয় ব্যবহার করে আমাদের অর্জনকে বিনষ্ট করে দিচ্ছে। তাদের কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। গত উপজেলা নির্বাচনে বিরোধী দল আসেনি। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারলাম না। কিছু সংখ্যক এমপি যারা এক মাস আগেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এক মাস পরে তারা নৌকা ফুটু করে দিয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান বলেন, পার্লামেন্ট নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ট আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচন। নৌকা প্রতীক নিয়ে এই নির্বাচন করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারবাসী আশ্রয় দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আন্তরিক সহযোগিতা করেছে।
চকরিয়ার এমপি জাফর আহমদ বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে পার্লামেন্ট নির্বাচন করেছি। সেখানে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই কাজ করেছে। আমরা বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে আমরা সব উপজেলায় জিততে পারিনি। কারণ এখানে দলের অনেকেই নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করেছে। এসব কারণ খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট