
পাঁচ বছর আগে নগরীর চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল মোড়ে নিজ বাসায় ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করা হয় পাঁচ বছরের শিশু নুসরাত জাহান তরীকে। দুই বছর তদন্ত করার পরও চান্দগাঁও থানা পুলিশ এ হত্যার কোন ক‚লকিনারা করতে পারেনি। ২০২৩ সালে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (মেট্রো)। অবশেষে গত শনিবার তরী হত্যায় একমাত্র আসামি রাসেল হোসেন শেখকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার আদালতে পাঠানো হলে শিশু তরী হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রাসেল। রাসেল হোসেন শেখ খুলনার রূপসা থানার চাঁদপুর দক্ষিণ পাড়ার জাকির শেখের ছেলে। তিনি বাহির সিগন্যাল বেপারিপাড়ার দেওয়ানজি হাট রোডের মোরশেদের কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২০২১ সালের ২৭ জুন নগরীর চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকায় বাসার খাটের নিচে শিশু তরীর মরদেহ পান মা ফাতেমা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার জানান, তরী হত্যার পর চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছিল। শুরু থেকে মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ঘটনার পরপরই ইমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু ডিএনএ প্রোফাইলে ইমনের সাথে না মেলায় ভিন্ন মোড় নেয় তদন্ত। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআইকে। ঘটনার পর হত্যায় জড়িত সন্দেহে চার-পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল র্যাব। ওই সময় রাসেল হোসেন শেখকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে র্যাব হেফাজত থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।
পুলিশ পরিদর্শক মর্জিনা জানান, টানা তদন্ত করে আমরা গত শনিবার চান্দগাঁও মোরশেদ কলোনি থেকে রাসেল হোসেন শেখকে গ্রেপ্তার করি। কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তরীকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে রাসেল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানান, তরীর পাশের বাসায় থাকতেন তিনি। তরীর মা ভোরে গার্মেন্টসে কর্মস্থলে চলে গেলে রাসেল ঘরে ঢুকে পাঁচ বছরের শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গলা টিপে হত্যা করেন। পরে মরদেহ ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। কৌশলে ঘটনার বিভিন্ন আলামতও নষ্ট করেন। রাসেল জানান, ঘটনার সময় আশপাশে ঘরের লোকজন ঘুমিয়ে থাকায় কেউ কিছু বুঝতে পারেনি। ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে গতকাল রবিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রাসেল।
পূর্বকোণ/ইবনুর