
জোটের শরিক দলগুলোর জন্য কিছু আসন বাদ রেখে নিজেদের একক প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে অধিকাংশ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। এমনিতে প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে বিএনপির। এ অবস্থার মধ্যে দলের একক প্রার্থী ঘোষণার পর যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। গত আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে এসব বৈঠক হয়েছে। এবার চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার প্রস্তুতি হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জেলার ৩৬টি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আগামীকাল রবিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকার গুলশান অফিসে ডেকেছেন দলটি। বিকেল ৪টায় ওই বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ছাড়াও ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, ২৬ অক্টোবর ঢাকার গুলশান অফিসের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে চট্টগ্রামের-১৬ সংসদীয় আসনের প্রায় ৪৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে দল থেকে টেলিফোন করা হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে ১৬ জনের নাম চূড়ান্ত করা হবে। ওইদিনের বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে আসনওয়ারি যাদের চূড়ান্ত করা হবে, তাদের পক্ষে অন্যদের কোন ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই কাজ করার জন্য বার্তা দেওয়া হতে পারে। চলতি অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্তকৃত প্রার্থীদের দল থেকে গ্রিন সিগনাল দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে সংসদীয় আসন রয়েছে ১৬টি। এসব আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন অর্ধ শতাধিক। কিন্তু ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে ফোন পেয়েছেন প্রায়
৪৫ বিএনপি নেতা। এছাড়া একই বৈঠকে কক্সবাজারের ৪, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ৩, নোয়াখালীর ৬, লক্ষ্মীপুরের ৪ এবং ফেনীর জেলার ৩ আসনসহ ৩৬ সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই প্রায় ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে গ্রিন সিগনাল দেবে বিএনপি। কে কোন আসনে প্রার্থী হবেন এই সময়ের মধ্যে দল থেকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে; অর্থাৎ সবুজ সংকেত দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এতে করে দলের কোন্দল কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। তফশিলের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। নানা দিক বিবেচনায় এবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির শীর্ষ কয়েক নেতার আসনে কাউকে সবুজ সংকেত দেবে না বিএনপি। পাশাপাশি মিত্র দল ও জোটের কয়েক শীর্ষ নেতার আসনেও একই কৌশল নেবে দলটি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর সাথে যোগাযোগ করলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ২৬ অক্টোবর ঢাকার গুলশান অফিসের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে কেন্দ্র থেকে ফোন পেয়েছি। ইনশাআল্লাহ ওই বৈঠকে যোগ দিব। এতদিন মাঠে ছিলাম, বিগত ১৭ বছর দলের আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পৃক্তও থেকেছি। অসংখ্য মামলার আসামি হয়েছি, জেলে খেটেছি। এবার ভাগ্যের পরীক্ষা হবে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়।
জানতে চাইলে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম আগামীকাল ২৬ অক্টোবর ঢাকার গুলশান অফিসে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বৈঠকের কথা স্বীকার করে পূর্বকোণকে বলেন, ‘ওই বৈঠকে চট্টগ্রামের ১৬, কক্সবাজারের ৪, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ৩, নোয়াখালীর ৬, লক্ষ্মীপুরের ৪ এবং ফেনী জেলার ৩ আসনসহ ৩৬ সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।’
পূর্বকোণ/পিআর