চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম নগরীর মৎস্যের সেবা মিলে পাহাড়ে
উত্তর কাট্টলীর বাংলা বাজার এলাকায় মাছ চাষকৃত পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ করছেন এক মৎস্য চাষী

চট্টগ্রাম নগরীর মৎস্যের সেবা মিলে পাহাড়ে

মোহাম্মদ আলী

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১২:১২ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম শহরে ১৬টি থানা থাকলেও একটিতেও নেই মৎস্য অফিস। এ কারণে সরকারি নিয়মিত কর্মকাণ্ড চালাতে হিমশিম খাচ্ছে জেলা মৎস্য অফিস। নগরীর মুরাদপুর বনগবেষণাগারের ভিতরে একটি উঁচু পাহাড়ে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের অবস্থানের কারণে সহজে মৎস্য চাষীরা সেখানে যেতে চায় না। এ কারণে শহরের মৎস্য চাষীরা সরকারি সেবা থেকে প্রায়শঃ বঞ্চিত হচ্ছে।

 

জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শহরে পুকুর-দিঘির সংখ্যা ৫৪৩টি। এসবের আয়তন ১০৩ হেক্টর। নগরীর ১৬ থানার মধ্যে তুলনামূলক মাছ চাষ বেশি হয় চান্দগাঁও, পতেঙ্গা, হালিশহর, আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানায়। কিন্তু আলোচ্য থানাগুলোসহ মৎস্য অধিদপ্তরের অধীন নগরীর কোথাও থানা মৎস্য অফিস নেই। অথচ শহরের বাইরে চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি থানায় আলাদা আলাদা মৎস্য অফিস রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের মৎস্য চাষীরা সেখানে গিয়ে নানা পরামর্শ নিয়ে থাকে। কিন্তু শহরের বেলায় তার ব্যত্যয় ঘটছে।

 

সূত্র জানায়, মৎস্য অধিদপ্তর বছরে একবার মাছ ধরার প্রধান প্রজনন মওসুমে ৫৮ দিনের সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের নিষেধাক্কা কর্মসূচি পালন করে থাকে। এ সময়ে কর্মসূচির স্বপক্ষে জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় মৎস্য অধিদপ্তরকে। এছাড়া মা-ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম, জাটকা সংরক্ষণ, কম্বিং অপারেশন, নগরীর বিভিন্ন বাজার মনিটরিং, মাছে রং ও জেলিসহ চিংড়ি বিক্রি, নিষিদ্ধ পিরানহা ও আফ্রিকার মাগুর মাছ বিক্রির তদারকি করতে হয় মৎস্য বিভাগকে।

 

কিন্তু নগরীর ১৬ থানায় নিয়মিত এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসে নেই আলাদা কোন লোকবল। এমনিতে অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী এ অফিসে সারাবছরই লোকবলের সংকট থাকে। চট্টগ্রাম শহরের বাইরে ১৫ উপজেলার অফিসসমূহ তদারকি এবং শহরের ১৬ থানায় সরাসরি কার্যক্রম চালাতে হয় জেলা মৎস্য অফিসকে। এ অবস্থায় শহরে মৎস্যের কোন থানা অফিস না থাকায় মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে জেলা অফিসকে হিমশিম খেতে হয়। বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও কার্যত কোন পরিবর্তন আসছে না।

 

মৎস্য চাষীদের অভিযোগ, শহরে কৃষি অধিদপ্তর, প্রাণি সম্পদসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরের থানা অফিস থাকলেও মৎস্য অধিদপ্তরের কোন থানা অফিস নেই। তাতে মৎস্য অফিসের কাক্সিক্ষত সেবা পায় না চাষীরা। যদিও চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের অবস্থান অনেক উঁচু পাহাড়ে। কোন মৎস্য চাষী একবার সেই পাহাড়ে গেল দ্বিতীয়বার আর যেতে চান না।

 

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসার শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ পূর্বকোণকে বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে চট্টগ্রাম জেলায় থানা অফিস রয়েছে ১৫টি। তবে চট্টগ্রাম শহরে ১৬ থানায় মৎস্য অধিদপ্তরের কোন অফিস নেই। তাই জেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে শহরে সরাসরি মৎস্য অধিদপ্তরের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে শহরে মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় দুরূহ হচ্ছে। এমনিতেই সারাবছর জুড়ে শহরে মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। এ অবস্থায় সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অধিদপ্তরের মতো মৎস্য অধিদপ্তরের থানা অফিস থাকলে কাজ আরো বেগবান হতো।

 

শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নগরীর নতুন ব্রিজ থেকে কর্ণফুলী নদীর মোহনা, কাটগড় মৎস্য ঘাট, দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট ও আকমল আলী মৎস্য ঘাট পর্যন্ত সামুদ্রিক নৌযানের নিয়মিত কার্যক্রম মনিটরিং করতে হয়। কিন্তু কোন থানা অফিস না থাকায় জেলা মৎস্য অফিসকে এসব কার্যক্রম পরিচালনা হিমশিম খেতে হয়।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট