চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

আমদানির খবরে কমে, বন্ধ হলে বাড়ে
ফাইল ছবি

পেঁয়াজের দাম নিয়ে কারসাজি

আমদানির খবরে কমে, বন্ধ হলে বাড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ

দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার খ্যাত খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করছে প্রতিনিয়ত। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম কমে যায় এই বাজারে। আবার পেঁয়াজের গাড়ি সীমান্ত হয়ে আসছে না- এমন খবরে বেড়ে যায় দাম। পেঁয়াজের এই ওঠানামার খেলা চলছে কদিন ধরে।

 

প্রায় পাঁচ মাস পর দেশের স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয় গত সপ্তাহে। এই খবরে এক মাস ধরে দেশের বাজারে বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। খাতুনগঞ্জেও সেটির প্রভাব পড়ে। এই বাজারে আগের সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল সেই পেঁয়াজের দাম গত মঙ্গলবার সকালে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নেমে আসে। যদিও বিকেল হতেই আবার দাম ৬৭ টাকায় ঠেকে। বুধবার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে এই দামেই। গতকাল বৃহস্পতিবার সেটি আরও বেড়েছে; বিক্রি হচ্ছে ৬৭-৭০টাকায়। গত ১২ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর ১০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। ১৪ আগস্ট সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে এসব পেঁয়াজ আনা হয়েছে।

 

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে প্রতি কেজিতে প্রায় ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছিল। কিন্তু পেঁয়াজের গাড়ি সীমান্ত হয়ে আর প্রবেশ করছে না এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে আবারও কিছুটা দাম বেড়ে যায়।

 

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লা মিঞা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, মঙ্গলবার সকালে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ছিল। তবে দুপুরের দিকে বাজারে ভারত থেকে পেঁয়াজের গাড়ি আসছে না-এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে ওইদিন বিকেল থেকে আবার দাম বাড়তে শুরু করে।

 

গতকাল পেঁয়াজ মানভেদে ৬৭ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের অন্যতম বড় পেঁয়াজ বিক্রির প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাজী স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. জাবেদ ইকবাল। যা আগেরদিন বিক্রি হয়েছিল, ৬৩ থেকে ৬৭ টাকা পর্যন্ত। চট্টগ্রামের বাজারে গত চার-পাঁচ মাস ভারতীয় পেঁয়াজ দেখা যায়নি। এই সময়ে চাহিদার প্রায় পুরোটাই মিটিয়েছে দেশি পেঁয়াজ। তবে বাজারে এই পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করলে আগস্টের শুরু থেকে প্রতি সপ্তাহে চার-পাঁচ টাকা করে দাম বাড়তে থাকে। ২ আগস্ট যে পেঁয়াজ পাইকারি আড়তে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল, তা ১০ দিনের মাথায় ১২ আগস্ট এসে দাম ঠেকে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। ওই সময়ে খুচরাবাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা পর্যন্ত দামে কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে তা কমে ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারের অধিকাংশ চাহিদা দেশি পেঁয়াজ পূরণ করছিল এতদিন। তবে এখন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। এজন্য বাজার এখন নির্ভর করবে আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর।

 

এজন্য ক্রেতারা দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় আমদানি স্বাভাবিক রাখার দাবি জানিয়েছেন। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরবরাহ কম-অজুহাতে কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতেই পেঁয়াজ ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির খবরে তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন যেহেতু দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম, সেজন্য আমাদের আশা থাকবে সরকার আমদানি স্বাভাবিক রাখবে। যাতে আরও কম দামে আমরা পেঁয়াজ কিনতে পারি।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট