চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো মানুয়ের পাশাপাশি পশুও তৈরি করছে: জাহিদুল ইসলাম
বক্তব্য রাখছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম

সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো মানুয়ের পাশাপাশি পশুও তৈরি করছে: জাহিদুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:২৩ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো মানুষ তৈরির পাশাপাশি পশুও তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেবল সনদ নির্ভর হয়ে গেছে। ডিগ্রি অর্জনের পর একজন শিক্ষার্থী মানুষ হচ্ছেন কি না, তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা সামাজিক হিসাব নেই।

 

আজ রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার কিং অব চিটাগং কনভেনশন সেন্টারে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের উদ্যোগে এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

আবরার ফাহাদ হত্যার প্রসঙ্গ টেনে জাহিদুল ইসলাম বলেন, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার আগ্রাসনবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন, সহপাঠীদের নামাজের আহ্বান জানাতেন। ‘সে কারণেই সহপাঠীরাই তাকে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করেছে। যারা তাকে হত্যা করেছে, তারাও নিশ্চয়ই সমান মেধাবী ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে মানবতার অভাব ছিল। তাই আমাদের আগে মানুষ হতে হবে।’

 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন সংখ্যা সীমিত। তাই কঠোর পরিশ্রম ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজের জায়গা করে নিতে হবে। জীবনের একপর্যায়ে কেউ শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, পুলিশ, ব্যবসায়ী কিংবা রাজনীতিবিদ হবে—যেই পেশাতেই যাওয়া হোক, মানবিক গুণাবলি ধরে রাখতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, ডাক্তার হও, তবে এমন ডাক্তার হইয়ো না, যে রোগী মারা যাচ্ছে জেনেও পেমেন্ট না পাওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা করবে না। প্রকৌশলী হইয়ো, তবে এমন প্রকৌশলী না, যে নিজের জ্ঞান দিয়ে রাষ্ট্রের অর্থ লোপাট করে। ব্যবসায়ী হইয়ো এমন, যে ঘরে ঘরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।

 

শিক্ষকতার প্রসঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিমলের মতো শিক্ষক হইয়ো না, যে ছাত্রীর সম্ভ্রমহানি করে। অনুসরণ করো মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষিকা মেহরিন ম্যাডামকে—যিনি শিক্ষার্থীদের আগুন থেকে বাঁচাতে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

 

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শিবির সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও গাজী ভাইদের ত্যাগের বিনিময়ে আজ কথা বলার সুযোগ মিলেছে। ২০১৩ সালে এমন একটি প্রোগ্রামকে ‘দেশদ্রোহী নাশকতার প্রোগ্রাম’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থী ও অতিথিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার কোনো কিছুই অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি।

 

বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত চট্টগ্রাম–৮ আসনের প্রার্থী ডা. আবু নাসের, চট্টগ্রাম–৯ আসনের প্রার্থী ডা. একে এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম–১০ আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মো. হায়দার আরিফ, ছাত্রশিবির কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা কার্যক্রম সম্পাদক আলাউদ্দীন আবির, ইউরোপিয়ান কমিশনের এশিয়া সেন্ট্রালাইজড সাপোর্ট ফর ইরাজমাস ন্যাশনাল ফোকাল পয়েন্টের রিজিওনাল ম্যানেজার ড. মোহাম্মদ আশিকুর রহমান এবং জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমির পরিবেশবিদ মো. নজরুল ইসলাম।

 

অনুষ্ঠানে জিপিএ–৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা অনুভূতি ব্যক্ত করেন। শেষে কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট