চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

ব্যবসায়ীদের চার দফা দাবি পুনর্বিবেচনার আহ্বান
এস এম নুরুল হক

ব্যবসায়ীদের চার দফা দাবি পুনর্বিবেচনার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ আগস্ট, ২০২৫ | ১:১২ অপরাহ্ণ

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজসহ দেশের সকল চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সদস্য ফি ও নবায়ন ফি হঠাৎ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চট্টগ্রামের সচেতন ব্যবসায়ী সমাজ। সংগঠনটির আহ্বায়ক এস এম নুরুল হক এ সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক’ আখ্যা দিয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান।

 

ব্যবসায়ী নেতারা জানান, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে যে সদস্য ফি ও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে তা ব্যবসায়ী মহলের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূর্বে যেখানে সদস্য ফি অর্ডিনারি ও এসোসিয়েট প্রকারভেদে ১৬শ ও ৮শ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার টাকায়। এমনকি নবায়ন ফিও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়বেন।

 

চট্টগ্রামের সচেতন ব্যবসায়ী সমাজ মনে করে-করোনার পরিস্থিতির পর ও বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসায়ীরা এখনো পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ অবস্থায় হঠাৎ করে ফি বহুগুণ বাড়ালে অনেকে সদস্য পদ নবায়ন থেকে বিরত থাকবেন, যা সামগ্রিক ব্যবসায়িক পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

সংগঠনটির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো-ভুয়া ভোটার তালিকা বাতিল ও নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন। চেম্বারের সদস্য ফি ও নবায়ন ফি পূর্বের মতো যৌক্তিক মাত্রায় নির্ধারণ। সকল শ্রেণির ব্যবসায়ীদের জন্য সদস্য পদ সহজলভ্য করা। চেম্বারের মেম্বারশিপ ও অন্যান্য এসোসিয়েশনের অনুরূপ কার্যক্রমে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নবায়নকৃত সকল সদস্যকে নির্বাচন কার্যক্রমে ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান।

 

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতা এস এম নুরুল হক বলেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এ দাবিগুলো পূরণ করা না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ব্যবসায়িক সংকট দেখা দিতে পারে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

 

সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়-সরকারকে অবশ্যই ব্যবসায়ী সমাজের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে ব্যবসাবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

 

তিনি আরো বলেন- স্বৈরাচার আমলে তৃণমূলের ব্যবসায়ীদের চিটাগাং চেম্বারের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে নিরুৎসাহিত করা হতো। গতবছরের আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে চেম্বারের তৎকালীন বোর্ড অব ডাইরেক্টরস্ পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে বর্তমান সরকার প্রশাসক নিয়োগ করে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা ব্যবসায়ীরা স্বাগত জানিয়েছি। প্রশাসক দায়িত্ব গ্রহণের পর সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের জন্য চিটাগাং চেম্বারের সদস্য পদ সহজলভ্য করেছেন। কিন্তু, হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে সদস্য ফি বৃদ্ধিতে এই চেম্বারসহ দেশের সকল চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত নিরুৎসাহিত হবে। এই ফি বৃদ্ধি অতীতে সুবিধাভোগীদের ষড়যন্ত্র কি না তা ক্ষতিয়ে দেখার দাবি রাখে।

 

চট্টগ্রামের সচেতন ব্যবসায়ী সমাজ আশা প্রকাশ করে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত পুনর্বিবেচনা করবে এবং দেশের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট