চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যাত্রা শুরু হয়েছে: আমীর খসরু
গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির বিজয় র‍্যালি

দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যাত্রা শুরু হয়েছে: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ আগস্ট, ২০২৫ | ৮:৪৪ অপরাহ্ণ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আজকের এ বাংলাদেশ, আমরা গণতন্ত্রের দিকে চলেছি। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যাত্রা শুরু হয়েছে। এ গণতন্ত্র বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য শুরু করেছি। গত ১৬ বছর ধরে ত্যাগ, জেল, গুম, খুন হয়েছি দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আজকের এ কর্মসূচি দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার এবং মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার যাত্রা। আজকে আমরা নির্বাচনের সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

 

তিনি বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত কেন্দ্র ঘোষিত বিজয় র‍্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজয় র‍্যালিটি নিউ মার্কেট মোড় থেকে শুরু হয়ে কোতোয়ালি মোড়, লালদীঘি, বক্সি বিট, আন্দরকিল্লা মোড়, চেরাগি মোড় হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

 

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন এবং মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজার পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুন অর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, তরিকুল ইসলাম তেনজিং। বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ ইদ্রিস মিয়া।

 

আমীর খসরু বলেন, আজকের জনসভা, মিছিল প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ ধানের শীষের পক্ষের শক্তি। দেশের মানুষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে। দেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সৈনিক, বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক, তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।

 

তিনি বলেন, বিএনপিতে যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের রাজনীতি বিএনপিতে নেই। যারাই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি ব্যবস্থা নিবে। দেশের মানুষ এখন সুষ্ঠু রাজনীতি চায়, দেশের মানুষ সহনশীল রাজনীতি চায়, দেশের মানুষ পরষ্পরের প্রতি সম্মানবোধ জানিয়ে রাজনীতি করতে চায়। রাজনীতিতে মতপ্রার্থক্য থেকেও একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিএনপি নতুন রাজনীতি শুরু করেছে বাংলাদেশে। আমাদের সকলকে সেটা ধারণ করতে হবে।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সফলভাবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। আমাদের বহু প্রাণের বিনিময়ে, ত্যাগের বিনিময়ে আজকে এ জায়গায় বিএনপির নেতৃত্বে দেশের জনগণকে নিয়ে সফলভাবে গণতন্ত্রের পথে চলতে শিখেছি।

 

তিনি বলেন, বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীর কোনো স্থান নেই। বারবার বলছি, কোনো শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীর জায়গা হবে না বিএনপিতে। ৫-৬ হাজারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোনো দখলদার, চাঁদাবাজদের জায়গা নেই বিএনপিতে। তাই সুশৃঙ্খল রাজনীতির চর্চা করতে হবে। কোনো ভাইয়ের রাজনীতি বিএনপিতে চলবে না। শুধু বিএনপির রাজনীতি করতে হবে।

 

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা এখন নির্বাচনের সড়কে ঢুকেছি। দেশের মানুষ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে। লক্ষ লক্ষ জনতা আজকে এখানে জমায়েত হয়েছে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের যে অগ্রযাত্রায় আমরা নেমেছি, সেটাকে সফলভাবে আরো বেশি সমাদর করতে হবে। এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

 

আজকে এ নির্বাচনের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, কিছু কিছু শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের জন্য কোনো জায়গা দেওয়া হবে না। গণতন্ত্রের বিজয়ের পথে আমরা চলছি, দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এ পথে যারা বাধাগ্রস্ত করবে আগামীদিনে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।

 

শেখ হাসিনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা রাজনীতি করবে, ভোটে যাবে না। তারা রাজনীতি করবে, গণতন্ত্র বিশ্বাস করবে না। তারা রাজনীতি করবে তাদের মতো করে সমস্যা সমাধানের জন্য। জনগণকে বাইরে রেখে, যেটা শেখ হাসিনা বারবার করেছে। দেশের মানুষকে বাইরে রেখে সে তার মতো করে দেশ চালিয়েছে। আবারও কিছু কিছু শক্তি নেমেছে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে বাইরে রেখে তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে, তাদের মতো করে দেশ চালাতে। এটা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনও গ্রহণ করবে না।

 

নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমরা জানি, নির্বাচনের প্রসরা এসেছে, দেশবাসী স্বস্তিতে আছে, আনন্দে আছে। কিন্তু নির্বাচন শেষ করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী দিনগুলো চলতে হবে। যাতে কেউ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে, গণতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে, দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, আজ থেকে শপথ নিতে হবে, সকলে যার যার এলাকায় যেতে হবে, মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। আগামী দিনের যে কর্মসূচি, রূপরেখা, দেশের মানুষের সকল রাজনৈতিক, সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার যে রূপরেখা বিএনপি তৈরি করেছে, তা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।

 

বিএনপির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে তিনি বলেন, আগামী দিনে আমরা এক কোটি মানুষের চাকরি ১৮ মাসের মধ্যে দিব ইনশাআল্লাহ, সেই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। দেশের মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা বিনামূল্যে দিব। আগামী দিনে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে সাধারণ মানুষ যাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, সেটারও শপথ আমরা নিয়েছি।

 

আমীর খসরু বলেন, দেশের মানুষ আগামী দিনে যে গণতন্ত্রের পথে চলবে, তার জন্য আমাদের অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিতে সকলের সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে, এটাই হচ্ছে বিএনপির আগামী দিনের কর্মসূচি। তাই এখান থেকে আপনারা যার যার এলাকায় গিয়ে ধানের শীষের এ খবরগুলো, আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন আপনাদেরকে দেখাতে হবে। জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট