
একটি ফোন হারিয়ে যায়, তার সঙ্গে হারিয়ে যায় কারও জরুরি নম্বর, মায়ের শেষ কণ্ঠস্বর, সন্তানের পাঠানো ছবিগুলো। কিন্তু এই হারানোটা শুধু দুর্ভাগ্য নয়—এই হারানোর পেছনে রয়েছে একটি সংগঠিত, চতুর, নিষ্ঠুর, গ্যাং।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে হালিশহরের বড়পুল এলাকায় ধরা পড়ল এমনই একটি মোবাইল ছিনতাইকারী চক্র। ডিবি-পশ্চিম বিভাগের চৌকস সদস্যরা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাতের অন্ধকারে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে চক্রের মূল হোতা মো. তুষারসহ (৩০) আরও ১১ জনকে।
গ্রেপ্তার ১২ জনের ঝুলিতে শুধু মোবাইল নয়, রয়েছে ভয় দেখানোর অস্ত্র—চারটি টিপ ছোরা। আর উদ্ধার হয়েছে মোট ১৫টি চোরাই মোবাইল।
পুলিশ জানায়, যাত্রীবাহী বাসে চড়ে ‘ভিড়ের নাটক’ করত তারা। তারপর হঠাৎ হট্টগোল—তারই ফাঁকে যাত্রীর পকেট খালি। কারও মোবাইল, কারও মানিব্যাগ। শুধু বাসেই নয়, পথচারীকেও রেহাই দিত না এরা। রাস্তায় দাঁড় করিয়ে মৃত্যু ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিত ফোন ও টাকা।
গ্রেপ্তার হওয়া বাকিদের নাম শুনলে বোঝা যায়, এই চক্র কতটা বিস্তৃত—আরিফ, রিপন প্রকাশ হৃদয়, নজরুল আহাম্মদ সাগর, আরিফ, রানা, দেলোয়ার, বাবু, রনি, ওমর ফারুক, নাজিম ও জসীম। অনেকের বিরুদ্ধে আগেই মামলা ছিল—ডাকাতি, অস্ত্র, মাদক, ছিনতাইয়ের অভিযোগে।
ডিবি জানায়, ওরা শুধু মোবাইল নেয় না—নিয়ে নেয় মানুষের নিরাপত্তা বোধও।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই চক্র ধরা পড়লেও শহরের প্রতিটি জটলায়, বাসের প্রতিটি হাতল ধরে ঝুলে থাকা মানুষটির মনে কি তবে ফিরে আসবে সেই হারানো আস্থা?
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ