চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ভর্তি শেষেও আসন খালি থাকবে ৬০ হাজারের বেশি
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে একাদশ শ্রেণির ভর্তি

ভর্তি শেষেও আসন খালি থাকবে ৬০ হাজারের বেশি

ইমরান বিন ছবুর

১ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ

একাদশ শ্রেণির ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ আবেদন চলবে আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত। চট্টগ্রামের শিক্ষা বোর্ডের অধীন থাকা পাঁচটি জেলার ২৯০টি কলেজে এবার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৪টি আসন রয়েছে।

 

তবে এবার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৮১ শিক্ষার্থী। সে হিসেবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আসন খালি থাকবে ৫৮ হাজার ৪৪৩টি। তবে বিগত বছরের তথ্যে দেখা যায়, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে কলেজে ভর্তি হয় না।

 

অন্যদিকে, ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭ জন। তবে চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে কলেজে ভর্তি হয় ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩১ জন। পাসের তুলনায় ৯ হাজার ৩৫৬ জন শিক্ষার্থী কলেজে কম ভর্তি হয়। ওই বছর চার দফা আবেদন নিয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করেও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কলেজগুলোতে ৬৪ হাজারের বেশি আসন খালি ছিল।

 

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ শাখার তথ্যমতে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি রয়েছে। এসব জেলায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির মোট আসনের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজারই চট্টগ্রাম জেলায়। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর কলেজগুলোতেই আসন সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।

 

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই আগ্রহ থাকে নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে। গতবছরের তথ্যমতে, নগরীর ৮টি সরকারি কলেজে মোট আসন রয়েছে ১০ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৩ হাজার ৫৯০টি, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩ হাজার ৭৭০টি এবং মানবিক বিভাগের আসন সংখ্যা ২ হাজার ৭৪০টি।

 

নগরীর কোন সরকারি কলেজে কত আসন: চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৬৬০টি এবং মানবিক বিভাগে ৩৮০টি। সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৭২৫টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৬৬০টি, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৬১৫টি এবং মানবিক বিভাগে ৪৫০টি। সরকারি কমার্স কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯৭০ আসন রয়েছে। চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে দুই শিফটে (দিবা ও নৈশ) মোট আসন সংখ্যা ২ হাজার ১৮০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে (দিবা) ৬৬০টি, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের দিবা ও নৈশ শাখায় ৩৮০টি করে আসন রয়েছে। মানবিক বিভাগের দিবা ও নৈশ শাখায় ৩৮০টি করে আসন রয়েছে।

 

এছাড়া চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪০০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৫০০টি, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৫০০টি এবং মানবিক বিভাগে ৪০০টি আসন রয়েছে। বাকলিয়া সরকারি কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৫টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৪৬০টি, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৫২৫টি এবং মানবিক বিভাগে ৪৫০টি। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৩০০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২০০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১০০টি আসন রয়েছে। চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৫০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৪৫০টি, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখায় ৩০০টি করে আসন আসন রয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম বলেন, বিগত বছরের ভর্তির তথ্য পর্যালোচনা করে কোন কোন কলেজে আসন কমানো হবে। যেসব কলেজে আসন আছে ১৫০ কিন্তু শিক্ষার্থী ভর্তি হয় মাত্র ৪০-৫০ জন, এসব কলেজে তো এত আসন রেখে লাভ নেই। এমন কলেজের আসন কমানো হবে। অন্যদিকে, অনেক কলেজে আসন বাড়ানোর জন্য আমরা ইতোমধ্যে আবেদন পেয়েছি। বাস্তবতার নিরিখে যদি ওসব কলেজের অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকে, প্রয়োজন অনুযায়ী আসন বাড়ানোর অনুমতি দেয়া যেতে পারে।

 

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে প্রথম ধাপে আবেদন নেওয়া হবে ৩০ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত। ১২ আগস্ট আবেদন যাচাই, বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। ১৩ ও ১৪ আগস্ট শুধুমাত্র খাতা চ্যালেঞ্জে ফলাফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীরা আবেদন করার সুযোগ পাবেন। প্রথম ধাপে আবেদনকারীদের ১৫ আগস্ট কলেজ পছন্দক্রম পরিবর্তনের সময় দেওয়া হবে। এরপর ২০ আগস্ট রাত ৮টায় ফল প্রকাশ করা হবে। ২২ আগস্ট প্রথম ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়নের সুযোগ দেওয়া হবে। যারা প্রথম ধাপে নির্বাচিত হয়েও নিশ্চায়ন করবে না তাদের দ্বিতীয় ধাপে পুনরায় ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে। ২৮ আগস্ট শিক্ষার্থীদের কলেজ পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। একই দিনে (২৮ আগস্ট) রাত ৮টায় দ্বিতীয় ধাপের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। ২৯ ও ৩০ আগস্ট দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিতদের নিশ্চায়ন করতে হবে।

 

৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। ৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। একই দিন (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা নিশ্চায়ন করতে পারবে। এ ধাপেও কোন শিক্ষার্থী নিশ্চায়ন না করলে তার আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। ৫ সেপ্টেম্বর সবশেষ মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।

 

এরপর তিন ধাপে নির্বাচিতদের চূড়ান্ত ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভর্তি চলবে ৭-১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট