
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শুরু হয়েছে তিন স্তরের পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে এবার প্রার্থীদের লিখিত, প্রেজেন্টেশন ও মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। গতকাল সকালে উপাচার্যের কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এছাড়া নিয়োগের স্বচ্ছতা ও যোগ্য শিক্ষক নির্ধারণের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রশাসন জিরো টলারেন্স থাকবে বলেও জানান তিনি।
চবি উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে এসে আমরা দেখতে পাই শিক্ষক নিয়োগ যথাযথভাবে হচ্ছে না। কেবল মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ফলে যোগ্যরা অনেক ক্ষেত্রেই বাদ পড়ে যাচ্ছেন, আর্থিক লেনদেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করছে এমন প্রমাণও রয়েছে। ফলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যোগ্যদের মধ্য থেকেই শিক্ষক নিয়োগ দেব।
তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ৫৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন নিয়োগ নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী এখন থেকে শিক্ষক নিয়োগ হবে তিন ধাপে: লিখিত, প্রেজেন্টেশন ও মৌখিক পরীক্ষা।
নতুন প্রক্রিয়ায় প্রথমে নেওয়া হচ্ছে ৫০ নম্বরের এক ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা। এতে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছে প্রেজেন্টেশন ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে।
উপাচার্য বলেন, শুধু মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীর বিশ্লেষণী দক্ষতা ও ক্লাসে পাঠদানের দক্ষতা বোঝা যায় না। তাই আমরা প্রেজেন্টেশন যুক্ত করেছি।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে তিনটি বিভাগে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৪ জুলাই সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ইংরেজি বিভাগে চারজন প্রার্থী অংশ নেন পরীক্ষায়। ২৫ জুলাই আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা দেন ২৯ জন। আর ২৬ জুলাই ব্যাংকিং এন্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগে অংশ নেন ৪২ জন প্রার্থী।
চবি উপাচার্যের মতে, যদি এই পরীক্ষার পরও যোগ্য কাউকে না পাই, তাহলে আমরা আবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ দেব। যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আমরা কোনও রকম ছাড় দেব না।
এই নিয়োগ পদ্ধতির প্রশংসা করে এক প্রার্থী বলেন, আগে শুধু মৌখিক পরীক্ষায় সবকিছু যাচাই করা হত, যা দৃষ্টিকটু ছিল। এখন লিখিত ও প্রেজেন্টেশনসহ তিন ধাপে যাচাই হওয়ায় মনে হচ্ছে সত্যিই মেধাবীদের সুযোগ পাওয়া সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, স্বৈরাচারী শাসন আমলে অবৈধ নিয়োগের জন্য সমালোচিত ছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ করে উপাচার্য শিরিন আখতারের আমলে কয়েক শ’ নিয়োগ আর্থিক কেলেংকারির মাধ্যমে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পূর্বকোণ/ইবনুর