
সপ্তাহখানেক পর কোরবানির ঈদ। তবে বন্দরনগরীর গরুর হাট দেখে তা বুঝার উপায় নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পশু বেচাকেনা শুরুর দিনে হাটে ক্রেতার দেখে মেলেনি বললেই চলে। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু আসছে বন্দরনগরে।
এদিন নগরীর নূর নগর হাউজিং এস্টেটে ইলিয়াস ব্রাদার্স মাঠে পশুর অস্থায়ী হাটে গিয়ে দেখা যায়, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, পটিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়ে আসা শতাধিক পশু রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। তবে এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি হাট। বিক্ষিপ্তভাবে হাট প্রস্তুতের কাজ করছেন খামারিরা। কেউ বালি আর ইটের কংক্রিট দিয়ে খানাখন্দ ভরাট করছেন, কেউ কাজ করছেন ত্রিপল টানানোর। আবার কেউ বাঁশ দিয়ে প্রস্তুত করছেন পশু রাখার বেষ্টনী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইলিয়াস ব্রাদার্স মাঠে পশুর অস্থায়ী হাটে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা অবস্থান করেও পশুবাহী কোনো যান প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। অবশ্য এরমধ্যে হাটের খানাখন্দ ভরাটের বালি নিয়ে প্রবেশ করে একাধিক ট্রাক। বেচাকেনা শুরুর প্রথমদিন সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় কেবল একটি পশু বিক্রি হয়েছে ওই হাটে। তবে কোরবানির কয়েকদিন আগে হাট জমে উঠবে বলে আশা ইজারাদারদের।
ইজারাদার খোরশেদ আলম বলেন, হাট পুরোপুরি প্রস্তুত না হলেও পুরোদমে কাজ চলছে। প্রথমদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০ ট্রাকের মতো পশু এসেছে। সব মিলিয়ে আমরা আশা করছি, এই হাটে পাঁচ থেকে ৬ হাজার পশু বিক্রি হবে। কোরবানির ঠিক কয়েকদিন আগে পুরোদমে পশু কেনাবেচা হবে।
এই হাটে কুষ্টিয়া থেকে নিজের খামারের ১৪ টি গরু বিক্রি করতে আসা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি ১৪ টি গরু নিয়ে এসেছি। ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকায় এসব গরু বিক্রি করব। গতবছরও এই হাটে ১৪টি গরু বিক্রি করেছিলাম। আজ অবশ্য কেউ দরদাম করেনি, তবে কোরবানির আগে আশা করি সব বিক্রি করতে পারব।
তোফাজ্জলের পরের সারিতেই বিক্রির জন্য ৬টি গরু রেখেছেন মেহেরপুরের খামারি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, এখনও ক্রেতা নেই হাটে। কারণ অফিস-আদালত এখনও ছুটি হয়নি। আবার রবি-সোমবারের দিকে সরকারি-বেসরকারি অফিসের স্যালারি হতে পারে। তখন হয়তো পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে।
তবে পশু বেচাকেনার জন্য অনেকটা প্রস্তুত হলেও একইভাবে ক্রেতাশূন্য পশুর স্থায়ী হাট সাগরিকা ও বিবিরহাট বাজার।
এবার নগরে ১০টি অস্থায়ী ও তিনটি স্থায়ী হাটে কোরবানির পশু বিক্রি হওয়ার কথা রয়েছে। এর বাইরে জেলার ১৫ উপজেলায় বসবে আরও দুই শতাধিক হাট।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এবার সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯ টি কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রামে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮৫ হাজার ২৫০ টি পশুর চাহিদা রয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলায়। সবচেয়ে কম ২৯ হাজার ৭৪২ টি পশুর চাহিদা রয়েছে বোয়ালখালীতে।
এবার চট্টগ্রামে কোরবানির ঈদ ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২ টি পশু। সেই হিসেবে ৩৫ হাজার ৩৮৭ টি পশুর ঘাটতি রয়েছে এবার। তবে বন্দরনগরীর আশেপাশের জেলা ও উত্তরবঙ্গ থেকে খামারিরা চট্টগ্রামে পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসায় সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
পূর্বকোণ/ইবনুর