বাকশাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এখনও অন্তর্নিহিত রয়েছে, আর এটি দেশের জন্য অশনি সংকেত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবায়ের আরিফ।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরীর জিইসি এলাকার একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এই মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় জোবায়ের আরিফ বলেন, ৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন ৭০ এর পাকিস্তানি গণপরিষদের সদস্যরা। এটা যথাযথ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রণয়ন হয়নি। ওই গণপরিষদ বাংদেশের অস্তিত্বকে স্বীকার করেনি। তাই ৭২ এর সংবিধানে পাকিস্তানের প্রেতাত্মা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নতুন সংবিধানের বিষয়ে আমাদের যে অবস্থান সেটা যদি রাজনৈতিক দলগুলো ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে এবং রাষ্ট্র এবং সংস্কার যদি বার বার গুলিয়ে ফেলে তাহলে এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের জনসাধারণকে ‘জনগণ’ হতে দিচ্ছে না। তারা এক ধরনের মব তৈরি করে একটি নির্বাচন চায়। যে নির্বাচনের মাধ্যমে হাসিনার দল আওয়ামী লীগ যেখানে ছিল ঠিক সেই স্থানটি দখল করতে চাচ্ছে। তারা শুধুমাত্র মসনদ দখল করতে চায়। মসনদ দখলের মাধ্যমে তাদের ভেতরের বাকশালী রূপ সামনে আনতে চায়। বাকশাল শুধু আওয়ামী লীগের ইস্যু না। বাকশাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অন্তর্নিহিত আছে। তাই দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো আর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সেনাপ্রধানের বক্তব্যের সঙ্গে কোনো তফাত নেই। আমরা এটাকে একটি অশনি সংকেত হিসেবে দেখতে চাই।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, দেশে আমরা পচে যাওয়া রাজনীতি দেখেছি, যেখানে রাজনীতি মানেই অস্বচ্ছতা, আর বিভিন্ন জনবিরোধী কাজ করে পার পেয়ে যাওয়া। আমরা এনসিপির কাছে আশা করব তারা স্বচ্ছতা ও জনগণের কাছে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলবে। অভ্যুত্থানের সাত মাস চলে গেল, অথচ আমরা একটা বিন্দুতে আটকে আছি। সেটা হল আওয়ামী লীগের বিচার। দীর্ঘ সাত মাসেও একটা মামলার চার্জশিট তৈরি হয়নি। সম্প্রতি ফজলে করিম চৌধুরীর একটা মামলার চার্জশিটে বেশ কয়েকজন আসামির নাম বাদ পড়েছে। দেখা যাচ্ছে যে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহযোগিতায় দাগি আসামিরা পার পেয়ে যাচ্ছে। এগুলো বড় ধরনের রেড সিগন্যাল। চট্টগ্রামে যারা আছেন, এই সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিত করা আপনাদের সবার দায়িত্ব। কারা ছাত্রদের ওপর হামলা করেছে, কারা এখন তাদের শেল্টার দিচ্ছে সেটা আমরা জানি। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য নীলা আফরোজের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলটির নেতা ইমন সৈয়দ, এরফানুল হক, রাফসান জনি প্রমুখ।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ