গ্রাহকের পানির বিলের অর্থ প্রতিমাসেই নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দেন চট্টগ্রাম ওয়াসার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী। জমা দেয়ার সেই রসিদ অফিসেও জমা করেন। নিয়মিত ব্যাংকের শাখায় পোস্টিং দেখিয়ে জমা দিলেও প্রকৃতপক্ষে একটি টাকাও জমা হয়নি। বরং জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া পোস্টিং দেখিয়ে চার ব্যাংকের ২৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন খোদ দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। যদিও শেষ পর্যন্ত কারোই রক্ষা হয়নি। আগেই আটক হওয়া অভিযুক্ত দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
অভিযুক্ত দুই আসামি হলেন: ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আজমির হোসেন অভি (২৭) ও মিঠুন ঘোষ (৩১)। অভি ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন শাহ হাফিজ মাস্টার বাড়ির আতিয়ার রহমানের ছেলে। মিঠুন ঘোষ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট খান মোহনা গ্রামের সেনের বাড়ির অরুণ কান্তি ঘোষের ছেলে।
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি ওয়াসা থেকে এই দুই কর্মচারীকে আটক করে থানায় সোপার্দ করে কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকদের পানির বিলের ২৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগটি অনুসন্ধানে অর্থআত্মসাতের প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এরপর গত মঙ্গলবার তাদের দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদক চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মেরিন আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, পরস্পর যোগসাজশে গ্রাহকের পানির বিল জমা না দিয়ে ২৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাত করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গ্রাহকদের কাছ থেকে পানির বিলের টাকা আদায় করে ওয়াসার কম্পিউটার সিস্টেমে জমা দেখানো হয়। আদতে সে টাকা ওয়াসার ব্যাংক একাউন্টে জমা করতেন না দুই আসামি। প্রাথমিক তদন্তে ২৪ লাখ ৬৬ টাকার অনিয়ম শনাক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এরমধ্যে জনতা ব্যাংকের কর্নেলহাট শাখার মাধ্যমে ৭৯ হাজার ৭৬৮ টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংক চৌধুরী হাট শাখার মাধ্যমে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৪ টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংক হালিশহর শাখার মাধ্যমে ৬২ হাজার ৯৮৫ টাকা, ওয়ান ব্যাংক চান্দগাঁও শাখার মাধ্যমে ২১ লাখ ৭ হাজার ৮৬২ টাকাসহ মোট ২৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৯ টাকা সংগ্রহ করে জিম্মায় নেয় দুই আসামি। কিন্তু ব্যাংকের শাখায় পোস্টিং দেখিয়ে প্রকৃতপক্ষে ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাত করেন তারা।
পূর্বকোণ/ইব