১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শপিংমল লাকী প্লাজা। ওই সময়ে চট্টগ্রাম শহরে হাতেগোনা কয়েকটি শপিংমলের মধ্যে অন্যতম হলো এই লাকী প্লাজা। তিনযুগ সময় পার করলেও কিংবা নতুন অনেক অত্যাধুনিক শপিংমল প্রতিষ্ঠা হলেও লাকী প্লাজার চাহিদা কোন অংশে কমেনি, বরং বেড়েছে।
তিনযুগ পরেও এখনো নারীদের পোশাকের আস্থার প্রতীক হয়ে রয়েছে লাকী প্লাজা মার্কেটটি। নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদে অবস্থিত এই শপিংমলটি বরাবরের মতো এবারেও ঈদ উপলক্ষে সাজানো হয়েছে মার্কেটের ভেতর বাহির। আলোর ঝলকানি চোখে পড়ে সন্ধ্যার পর। নগরীর ব্যস্ততম এই এলাকাতেই কাছাকাছি রয়েছে চারটি শপিংমল। যারমধ্যে সবচেয়ে পুরোনো এই মার্কেটটি। পুরোনো হলেও প্রতিনিয়ত নতুন ক্রেতার আস্থা অর্জন করছে এই মার্কেটের বিক্রেতারা ও দোকানগুলো।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চারতলা এই মার্কেটে ৪১০টি দোকানেই ঈদ উপলক্ষে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। দোকানিরা ব্যস্ত ক্রেতাদের পণ্য দেখাতে। চলছে দামাদামি।
শপিংমলটির প্রথম তলায় রয়েছে নারীদের শাড়ি, সেলোয়ার কামিজ, ত্রিপিস, জুতার দোকান। এছাড়া নিচতলায় রাস্তার পাশের কায়েকটি দোকান রয়েছে ফাস্টফুড, সেলুন ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে জুয়েলারি, কসমেটিকস ও কাপড়ের দোকান। তৃতীয় তলায় আছে জুতা, নারী ও পুরুষের টেইলার্স, ব্যাগ ও কোকারিজ আইটেমের দোকান। এছাড়া চতুর্থ তলায় রয়েছে শিশু ও নারী-পুরুষদের বিভিন্ন রেডিমেইড গার্মেন্টস পণ্যের দোকান।
ঈদে ক্রেতাদের নিরাপত্তায় এই শপিংমলের স্থায়ী ১৪ জন নিরাপত্তাকর্মীর পাশপাশি অতিরিক্ত ৯জন নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে মার্কেট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মোট ৬৫ টি সিসিটিভি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। মার্কেট ভবনের ষষ্ঠ তলায় রয়েছে নারী ও পুরুষের জন্য নামাজের ব্যবস্থা। রয়েছে পর্যাপ্ত শোচাগার।
লাকী প্লাজা দোকান মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, লাকী প্লাজা চট্টগ্রামের একটি ঐতিহ্যবাহী মার্কেট। তিনযুগ হয়ে গেলেও এই মার্কেটের চাহিদা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের জন্য এটি বেশ পছন্দের মার্কেট। ঈদ ছাড়াও এই মার্কেটে প্রচুর ক্রেতার আনাগোনা হয়। এখন ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি দোকানেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা মার্কেট কর্তৃপক্ষ সব ব্যবসায়ীকে ক্রেতাদের সাথে সুন্দর আচরণ ও অবশ্যই সহনীয় দাম রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। তাই ক্রেতারাও তাদের বাজেটের মধ্যেই সব পণ্য পাচ্ছে। কোন ক্রেতা যদি অতিরিক্ত দামের অভিযোগ করে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিব। যদিও এখন পর্যন্ত এমন কোন অভিযোগ আসেনি। তাই ক্রেতাদের বলবো নির্বিঘ্নে লাকী প্লাজায় এসে ঈদের কেনাকাটা করুন।
নগরীর হালিশহর থেকে ঈদের কেনাকাটার জন্য আসা এক দম্পতি বলেন, ছোটবেলায় বাবার সাথে আসতাম এই লাকী প্লাজায়। এখন নিজের সন্তানদের নিয়ে আসি। অনেক পুরোনো দোকান এখনো আছে। সময়ের সাথে তাদের কালেকশনও বেড়েছে। দামও সহনীয় পর্যায়ে আছে।
তিনি আরো বলেন, অনেক মার্কেটে ঘুরাঘুরি করলেও দেখা যায় শেষমেষ কেনাকাটা করতে হয় এই লাকী প্লাজা থেকেই।
পূর্বকোণ/ইব