চট্টগ্রাম শহরের শপিংমলের নামের তালিকার প্রথম সারিতে থাকা মার্কেটের নাম ইউনেস্কো সিটি সেন্টার। জুয়েলারির জন্য বিখ্যাত ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, শাড়ির জন্য প্রসিদ্ধ নবরূপা ও সপুরা সিল্কের মতো চট্টগ্রামে একমাত্র শপ রয়েছে এই মার্কেটে। নগরের ব্যস্ততম এলাকা ও প্রাণকেন্দ্রে জিইসিতে অবস্থিত এই শপিংমলে চলছে ঈদ বিক্রয় উৎসব। আর উৎসবকে কেন্দ্র করে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সেজেছে পুরো মার্কেট।
জনপ্রিয় এ শপিংমলের প্রবেশ পথেই রাখা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মার্কেটের নিজস্ব সিকিউরিটির পাশাপাশি ঈদ বাজার উপলক্ষে রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফলে স্বাচ্ছন্দ্যে মার্কেটে আসা যাওয়া করছেন ক্রেতারা। প্রতিটি ফ্লোরে সর্বক্ষণ কাজ করছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। মার্কেটের সামনে যানবাহনের ভিড় ব্যবস্থাপনায়ও কাজ করছেন কয়েকজন। যেখানে ক্রেতাদের জন্য রয়েছে ফ্রি গাড়ি পার্কিং সুবিধা। মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই শপিংমলে পঞ্চম তলা পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের ১৫৫টি দোকান রয়েছে। ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের স্বাচ্ছন্দ্য দিতে নানা আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে শপিংমল কর্তৃপক্ষ।
বিক্রেতারা জানান, এবার ঈদে তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই শপিংমল। কারণ এই শপিংমলে শিশু, তরুণ-তরুণী ও বয়স্ক সবার জন্যই রয়েছে কাপড়ের দোকান। এমনকি এই শপিংমলের ৫ম তলায় রয়েছে কম্পিউটার ও আইটি পণ্যের দোকানে সমৃদ্ধ একটি আলাদা ফ্লোর। ফলে এক শপিংমলেই পাওয়া যাচ্ছে সব পণ্যের দোকান। আর সব ধরনের পণ্যের মূল্যও রয়েছে ক্রেতার নাগালের মধ্যে। ভারতীয় পোশাক না আসায় এবার বাজার দেশি ও পাকিস্তানি পোশাকের দখলে। তাছাড়া ব্র্যান্ডের পোশাকেরও দারুণ জনপ্রিয়তা আছে এবার।
ইউনেস্কো সিটি সেন্টার শপ ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হানিফ মিয়া বলেন, শপিংমলের প্রথম থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত পাঁচটি ফ্লোরে ১৫৫টি দোকানে চলছে ঈদের বেচাবিক্রি। এরমধ্যে প্রথম তিন তলায় নারীদের পোশাকের দোকান, জুতা ও কসমেটিকসের দোকান, কয়েকটি ব্র্যান্ডশপ ও বেবিশপ। চতুর্থ তলায় রয়েছে পুরুষদের পোশাক, জুতা ও প্রসাধনীর দোকান। এছাড়াও পঞ্চম তলায় রয়েছে কম্পিউটার, মোবাইল, ক্যামেরা ও আইটি পণ্যের দোকান। যেখানে ৫ম রোজা থেকে ২৫তম রোজা পর্যন্ত ২০দিন ব্যাপী চলছে ঈদ বিক্রয় উৎসব। সেখানে রয়েছে নানা পণ্যের ওপর বিশেষ ছাড়। এছাড়াও ডায়মন্ডের জন্য বিখ্যাত ‘ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড রয়েছে এই শপিংমলে। যেখানে ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের ব্যাপক সারা পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ঈদের মূল কেনাকাটা শুরু হয় রমজানের একেবারে শেষ দিকে। তবে রমজানের শুরু থেকেই ভিড় রয়েছে ক্রেতাদের। সাধারণত দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা এবং ইফতারের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেশি ভিড় থাকে ক্রেতাদের। এছাড়া শপিংমলে আসা ক্রেতাদের জন্য কুইজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেখানে উত্তর দিয়ে ক্রেতারা পাচ্ছেন বিভিন্ন পুরস্কার।
নগরের লালখান বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটার জন্য আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ফয়সাল কামাল বলেন, আমি ঈদে বাড়ি যাওয়ার আগে প্রতিবছর এখান থেকে বাসার সবার জন্য কেনাকাটা করি। এখানে সুবিধাটা হলো সব তো পাওয়া যায়-ই, দামও মোটামুটি নাগালে। আর ভিড় থাকলেও অনেকগুলো সিঁড়ি, চলাচল করতে সুবিধা। তাই কেনাকাটা করতে খুব বেশি ঝামেলা হয় না।
পূর্বকোণ/ইব