চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫

জলাবদ্ধতা দূর করতে নতুন কালভার্ট হচ্ছে মুরাদপুরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ

নগরীর মুরাদপুর এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর করতে নতুন কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় মুরাদপুর এন মোহাম্মদ কনভেনশন এলাকায় এই কালভার্ট নির্মাণ করবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

 

স্থানীয় বাসিন্দা ও সড়ক ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ কমিয়ে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন কালভার্টটি নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামসুল আলম। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের সময় এ নির্দেশনা দেন তিনি।

 

জানা যায়, মুরাদপুর কনভেনশন হলের সামনে সিডিএ এভিনিউর বিপরীত প্রান্তে মির্জা খালের পানি একটি ক্রস কালভার্টের মাধ্যমে এসে নালায় পড়ে। নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, সুগন্ধা আাবাসিক এলাকা, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি দিক থেকে আসা পানি মির্জা খাল দিয়ে নেমে এসে সিডিএ এভিনিউ রোডের কাছে এসে দুই দিকে ভাগ হয়ে গেছে। একটি শাখা সিডিএ এভিনিউ পার হয়ে ক্রস কালভার্টের মাধ্যমে মুরাদপুর থেকে আসা নালার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। অপর শাখাটি সিডিএ এভিনিউ রোডের সমান্তরালে বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের পাশ দিয়ে চাক্তাই ডাইভারশন খালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, মুরাদপুর অংশে জলাবদ্ধতার জন্য অন্যতম দায়ী এন মোহাম্মদের সামনের ওই কালভার্ট। কালভার্টটি ভেঙে পুনর্নির্মাণ না করলে জলাবদ্ধতা দূর হবে না। তবে একটি নগরীর অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় সড়ক বন্ধ রেখে কাজ করা যাবে না। তাই কালভার্টটিকে তিন ভাগ করে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে ডিজাইন টিম কাজ করছে।

 

তিনি আরো বলেন, কালভার্টটির এক পাশে মির্জা খাল এবং অন্য পাশে চাক্তাই খাল। দুই নম্বর গেট ও মুরাদপুরের পানি কালভার্টটির নিচ দিয়ে চাক্তাই খালে যাওয়ার কথা। কিন্তু নিচে ওয়াসা, গ্যাস ও বিটিসিএল এর ক্যাবলের কারণে পুরো ব্লক হয়ে রয়েছে। যার কারণে মির্জা ও চশমা খালের পানি ঠিক মত যেতে পারছে না। ফলে এন মোহাম্মাদের ওই এলাকায় পানির ফ্লো এসে যেতে না পেরে সড়কের উপরে উঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

 

কালভার্টটির নিচে বিভিন্ন সংস্থার ইউটিলিটির লাইন রয়েছে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক বলেন, সেখান থেকে ইতোমধ্যে ইউটিলিটির লাইন সরানো হয়েছে। তবে ওয়াসার দু’টি বড় পাইপ সরানো যায়নি। সেগুলো সেখান থেকে সরানো যাবে না বলে জানিয়েছেন ওয়াসা। ওই পাইপগুলো রেখে কাজ চালানো আসলে অনেকটা চ্যালেঞ্জিং।

 

প্রথম দিকে, মুরাদপুর-বহদ্দারহাট সড়কের লেন বন্ধ রেখে কাজ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও পরিবর্তীতে এক লেনের এক অংশ বন্ধ রেখে অন্য অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচলের সুযোগ থাকবে। এখানে ফ্লাইওভারের শেষ অংশ হওয়ায় যানবাহনের প্রচুর চাপ রয়েছে। তিন দফায় ব্রিজের কাজ করতে গেলে প্রায় ৮ থেকে ৯ মাস সময় লাগবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

 

এলাকাবাসীদের সাময়িক ভোগান্তি পোহাতে হবে উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, মুরাদপুরে জলাবদ্ধতা হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই ব্রিজ। এই ব্রিজের কানেক্টিভিটি না থাকায় সেখানে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ করতে গেলে এই সড়ক ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। তবে এই এলাকাকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে গেলে এই ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য আমরা সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সাথে আলাপ করেছি। এ বিষয়টি তারাও গুরুত্ব সহকারে দেখবে।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট