আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ, প্রতিরক্ষা ও ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে নৌবাহিনী। নৌবাহিনীর আগ্রহে এখন ঝুলে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেন্ডার প্রক্রিয়া। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গুর তীর প্রতিরক্ষা-বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প গত বছরের (২০২৪ সাল) ২৭ মে একনেক সভায় অনুমোদন হয়। একই দিন আনোয়ারা, বাঁশখালী ছাড়াও বোয়ালখালী উপজেলায় ভাঙন প্রতিরোধে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প পাস করা হয়। আনোয়ারা ও বাঁশখালীর প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। বোয়ালখালীতে কর্ণফুলী ও বিভিন্ন খালের ভাঙনরোধ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৪ কোটি নয় লাখ টাকা।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে প্রকল্পের মেয়াদ-কাল ধরা হয়। ২০২৭ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ ছাড়াই প্রকল্প দুটি অনুমোদন হয়। শুরু থেকেই বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় সংকোচন নীতিতে পড়ে প্রকল্প দুটি। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর এই মেগাপ্রকল্প দুটি নিয়ে আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। শেষে তীব্র ভাঙন ও জনজীবনের বিপর্যস্ত অবস্থা পর্যালোচনা করে প্রকল্প বাস্তবায়নে আলোর মুখ দেখে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নভেম্বরে টেন্ডার গ্রহণ করা হয়। মধ্য ডিসেম্বরে টেন্ডার অনুমোদনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। এরমধ্যে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় নৌবাহিনী। দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে নৌবাহিনী।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, নৌবাহিনী কাজ করার আগ্রহের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। তারা জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য নভেম্বর মাসে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। যাতে জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা যায়। কারণ কাজ শুরু করতে দীর্ঘায়িত হলে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যাবে। বর্ষাকালে ভাঙন তীব্র ভাঙনে বিশাল এলাকায় সাগরের পানি ঢুকে বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
পাউবো জানায়, বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা (১ম পর্যায়) প্রকল্পে পোল্ডার ৬৪/এ তিন দশমিক ৬১০ কিলোমিটার, ৬৪/১সি’র দুই দশমিক ৮০০ কিমি, ৬৩/১ এ’র পাঁচ দশমিক ১৭৫ কিমি বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ ও ঢাল সংরক্ষণের কাজ করা হবে। এছাড়াও পোল্ডার ৬৪/১ এ’র এক দশমিক ১০০ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ কাজ করা হবে। বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় ১২ দশমিক ৬৮৫ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা এবং বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার তারেক বলেন, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে নৌবাহিনী। আমরা টেন্ডার আহ্বান করেছি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তীব্র ভাঙন ও জনগুরুত্ব বিবেচনা করে ৩৩ প্যাকেজের কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে ৭শ কোটি টাকার টেন্ডারে সরকারের প্রায় ৬২ কোটি টাকা সাশ্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত- চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনের দুটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী।
পূর্বকোণ/ইব